দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থ্যা নিতে হবে

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি বাণিজ্য
সারা দেশে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি বাণিজ্যসহ নানা রকম অনিয়মের খবর পাওয়া যায়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কিছু শিক্ষক মিলে তৈরি করেন সিন্ডিকেট। এ সিন্ডিকেট নিয়মবহির্ভূতভাবে শিক্ষার্থী ভর্তি করে এবং শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায় করে থাকে। বস্তুত এটিও এক ধরনের দুর্নীতি। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি ফি নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। বিভিন্ন অজুহাতে এর অতিরিক্ত ফি আদায় করা অনৈতিক। যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারি নির্দেশনা না মেনে এ চর্চা করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অর্থ তছরুপের চেষ্টাও চলে। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটিতে একশ্রেণির দুর্বৃত্ত বসে আছে। তারা নিজেদের অবৈধ আয়ের উৎস হিসাবে প্রতিষ্ঠানগুলোকে বেছে নিয়েছে। বস্তুত এসব অভিযোগ থেকেই বোঝা যায় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কত অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনা ঘটছে। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের কাছ থেকে গলাকাটা ফি আদায় বন্ধ করাসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি রোধে সরকারি তদারকি আরও জোরদার করা প্রয়োজন। অভিভাবকদেরও উচিত দুর্নীতিবাজ শিক্ষকদের বিষয়ে সোচ্চার হওয়া। সম্প্রতি ভর্তি বাণিজ্যের অভিযোগে রাজধানীর একটি নামিদামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সই করা এক চিঠিতে ওই শিক্ষককে বরখাস্তের বিষয়টি জানানো হয়। একইসঙ্গে তাকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, সেই মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রথম শ্রেণিতে ভর্তিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) নির্দেশনা অনুসরণ না করে কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থীকে ভর্তির জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়। জানা যায়, লটারির ফল অনুযায়ী ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য নির্বাচিতদের তালিকায় লটারিতে নির্বাচিত হয়নি এমন কয়েকজন শিক্ষার্থীর নামও পাওয়া যায়। এ নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করেন অভিভাবকরা। পরে বিষয়টির তদন্ত করা হয়। তদন্তে কয়েকজন শিক্ষার্থীর অবৈধ ভর্তির প্রমাণ পাওয়া গেছে। একজন দায়িত্বশীল শাখাপ্রধান এবং সিনিয়র শিক্ষক হয়ে এমন কাজ করায় বিভিন্ন মহলে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভর্তি কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। বরখাস্তকৃত শিক্ষককে দেওয়া প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সই করা এক চিঠিতেও উল্লেখ করা হয়েছে, এমন কর্মকা-ে জনসমক্ষে প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হয়েছে। কোনো কোনো শিক্ষক যেভাবে ভর্তি বাণিজ্যে মেতে ওঠেন তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ভর্তি বাণিজ্য রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি যারা দায়ী বলে চিহ্নিত হচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।