অধরাই থাকছে চক্রের মূল সদস্যরা

আকাশপথে স্বর্ণ চোরাকারবারি
সারা দেশের জল ও স্থলের মতো আকাশপথেও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সোনা চোরাচালান চক্র। এই সোনা চোরাকারবারিদের ভয়ংকর সিন্ডিকেটের সঙ্গে সরকারি বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারাও জড়িত। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরগুলোতে চোরাচালানের সোনা উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে। তবে দেশে যে পরিমাণ সোনা চোরাচালান হয়, তার ১ শতাংশও ধরা পড়ে না। যে পরিমাণ চোরাচালানের সোনা ধরা পড়ে, তা সমুদ্রের একবিন্দু জলের সমান। এ যাবৎ সোনাসহ যত ব্যক্তি ধরা পড়েছেন, তার অধিকাংশের বিচার হয়নি। আর সরকারের কঠোর নীতিমালা ছাড়া সোনা চোরাচালান বন্ধ হবে না। কারণ, সোনা চোরাচালানের যে তথ্য আমরা গণমাধ্যম থেকে পাচ্ছি, তাতে এটা স্পষ্ট যে, সরকারি বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা এই চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত। স্বর্ণ চোরাচালানের নিরাপদ ও জনপ্রিয় রুট এখন আকাশপথ। বিমানকে নিরাপদ হিসেবে বেছে নিয়েছে চোরাকারবারিরা। কোন সময়, কোন ফ্লাইট নিরাপদ সেটিও জানানো হয় কারবারিদের। এই অবৈধ কাজে বাংলাদেশকে নিরাপদ মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
গোয়েন্দা সূত্র বলছে, স্বর্ণ পাচারে বিশেষ করে মধ্যরাত ও ভোর রাতের ফ্লাইটকে বেচে নেওয়া হয়। এই সময় বিমানবন্দর এলাকা কিছুটা নীরব থাকে। আকাশপথে এ ধরনের চোরাচালানে মূল হোতার সহযোগী হিসেবে সিভিল অ্যাভিয়েশন ও শুল্ক বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাশাপাশি বিমানবন্দরের নিরাপত্তাকর্মী, পুলিশ, আনসার ও বিমানবন্দরগুলোতে কর্মরত বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম মাঝেমধ্যেই প্রকাশ পায়। এর পাশাপাশি পাইলট, কো-পাইলট, এয়ারক্র্যাফট মেকানিক, সহকারী এয়ারক্র্যাফট মেকানিক, জুনিয়র টেকনিশিয়ান, শিডিউল বিভাগ, ক্লিনিং বিভাগ, ক্যাটারিং বিভাগ, অপারেশন ও ট্রেনিং বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম আছে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে।
বাংলাদেশে আসার পর বেশিরভাগ স্বর্ণ পাচার হচ্ছে প্রতিবেশী দেশ ভারতে। সম্প্রতি বিমানের শৌচাগার, যাত্রী আসন, জুতার ভেতরে, পরিত্যক্ত অবস্থায় ও ময়লার ঝুড়িসহ বিভিন্ন গোপন স্থান থেকে জব্দ করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ। এসব ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ও এপিবিএন পুলিশ চোরা কারবারিদের আটক করতে পারলেও মামলা তদন্তে ধরাছোঁয়ার বাহিরেই থেকে যাচ্ছে চক্রের গডফাদাররা। বিশেষ করে শাহজালাল বিমানবন্দরে বেড়েছে স্বর্ণের চোরাচালান। ফলে শাহজালাল বিমানবন্দরসহ দেশের প্রত্যেক বিমানবন্দরে স্বর্ণ চোরাচালান রোধে কঠোর হত হবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি আরও বাড়াতে হবে। অপরাধী যেই হোকনা কেন, সকল অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে হবে।