ভর্তি বাণিজ্য বন্ধ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দুর্নীতি মুক্ত করন

প্রতি বছর শিক্ষার্থী ভর্তির সময় নানা রকম অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায়। বিশেষ করে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এর প্রভাব অনেক বেশি। কিছু অসাধু শিক্ষক বিভিন্ন রকম কারণ দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করছে। যদি ও সরকার ভর্তি বাণিজ্য রোধে ব্যাবস্থা নিয়েছে তথাপি কিছুকিছু শিক্ষক মিলে নানা ভাবে সিন্ডিকেট তেরি করছে। সারা দেশে বেড়েই চলছে এই সিন্ডিকেট। অভিযোগ পাওয়া যায় কোনো কোনো শিক্ষক যেভাবে ভর্তি বাণিজ্যে মেতে ওঠেছে এ বিষয়টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এক সূত্রে, জানা যায়, ভর্তি বাণিজ্যের দায়ে রাজধানীর একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সই করা এক চিঠিতে ওই শিক্ষককে বরখাস্তের বিষয়টি জানানো হয়েছে, অভিযোগ উঠেছে, ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রথম শ্রেণিতে ভর্তিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) নির্দেশনা অনুসরণ না করে কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থীকে ভর্তির জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়। জানা যায়, লটারিতে নির্বাচিত হয়নি এমন কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা হয় বলে অভিযোগ ওঠেছে। এ নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করেন অভিভাবকরা। পরে বিষয়টির তদন্ত করা হয়। তদন্তে কয়েকজন শিক্ষার্থীর অবৈধ ভর্তির প্রমাণ পাওয়া গেছে। একজন দায়িত্বশীল শাখা-প্রধান এবং সিনিয়র শিক্ষক হয়ে কি ভাবে এমন কাজ করতে পাড়ে? শিক্ষককে বলা হয় মানুষ তেরির কারিগর তাহলে সেই শিক্ষক কিভাবে এমন কাজ করতে পাড়ে? নানা প্রশ্ন অভিভাবকদের, এমন কাজ করায় বিভিন্ন মহলে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভর্তি কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। সারা দেশেই বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি বাণিজ্যসহ নানা রকম অনিয়মের এবং শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায় করে থাকে। এটিও এক ধরনের দুর্নীতি। যদি ও খবর পাওয়া যায়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কিছু শিক্ষক আছেন যারা নিয়ম-বহির্ভূতভাবে শিক্ষার্থী ভর্তি করে সরকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি ফি নির্ধারণ করে দিয়েছে। বিভিন্ন অজুহাতে এর অতিরিক্ত ফি আদায় করা অনৈতিক। যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারি নির্দেশনা না মেনে অতিরিক্ত ভর্তি ফি নিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যাবস্থা নেওয়া জরুরি। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটিতে একশ্রেণির দুর্বৃত্ত বসে আছে। তারা নিজেদের অবৈধ আয়ের উৎস হিসাবে প্রতিষ্ঠানগুলোকে বেছে নিয়েছে। এখান থেকে তারা বিভিন্ন ভাবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করছে। এর বেশির ভাগ প্রভাব পড়ছে গরিব মেধাবী শিক্ষাথীদের ওপর তারা এমন গলাকাটা ভর্তি ফি দিতে না পেরে পড়াশুনা থেকে ঝরে পড়ছে। এসব অভিযোগ থেকেই বোঝা যায় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কত অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনা ঘটছে। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের কাছ থেকে ‘গলাকাটা’ ফি আদায় বন্ধ করাসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি রোধে সরকারকে আরও কঠোর আইনি ব্যাবস্থা নিতে হবে। অভিভাবকদের উচিত দুর্নীতিবাজ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলা।