সম্পাদকীয়

শ্রমিকদের দক্ষ করে গড়তে হবে

জনশক্তি রপ্তানি

বিদেশের শ্রমবাজারে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থানের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। কিন্তু সেই সুযোগ আমাদের তরুণ-যুবারা যথেষ্ট পরিমাণে নিতে পারছেন না প্রয়োজনীয় দক্ষতার অভাবে। বিষয়টি বহুল আলোচিত হলেও যুবশক্তির দক্ষতা উন্নয়নে আমাদের অগ্রগতি খুবই কম। ফলে জনশক্তি রপ্তানিতে কাক্সিক্ষত গতিও আসছে না। এমন পরিস্থিতিতে জানা যায়, মধ্যপ্রাচ্যের দেশ জর্দান বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক ক্ষেত্রের ৬৫১ জন দক্ষ নারী কর্মী নেবে। যাতায়াত, থাকা-খাওয়া, প্রাথমিক চিকিৎসা এবং কর্মক্ষেত্রে যাওয়া-আসার খরচ বহন করার পরও জর্দানি কম্পানিগুলো প্রত্যেক কর্মীকে মাসে বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৯ হাজার টাকার বেশি বেতন দেবে। নতুন বছরের শুরুতে নিঃসন্দেহে এটি একটি ভালো সংবাদ। নতুন সরকারের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম একটি চ্যালেঞ্জ হলো বৈদেশিক মুদ্রার প্রয়োজনীয় স্থিতি রক্ষা করা। বাংলাদেশ প্রধানত দুটি খাত থেকে বৈদেশিক মুদ্রা পায়-রপ্তানি এবং প্রবাস আয়। রপ্তানির ক্ষেত্রে পণ্যের কাঁচামাল আমদানিতে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা চলেও যায়। কিন্তু রপ্তানি আয়ের প্রায় পুরোটাই দেশে থাকে। তা সত্ত্বেও এ ক্ষেত্রে আমরা বিদেশের শ্রমবাজারগুলোর চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে এগোতে পারছি না। যথেষ্ট পরিমাণে দক্ষ শ্রমিক পাঠাতে পারছি না। দক্ষ শ্রমিক পাঠানোর সুবিধাও অনেক। একজন দক্ষ শ্রমিক কয়েকজন অদক্ষ শ্রমিকের সমান রেমিট্যান্স বা প্রবাস আয় দেশে পাঠাতে পারেন। বাংলাদেশ তৈরি পোশাক শিল্পে অগ্রবর্তী একটি দেশ। আমাদের প্রচুর দক্ষ শ্রমিক রয়েছে। এই ক্ষেত্রটিতে বিদেশের বাজারে আমরা নিয়মিত খোঁজখবর রেখে আরো অনেক শ্রমিক পাঠাতে পারি। এ ক্ষেত্রে প্রেরিত শ্রমিকদের দক্ষতা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েই শ্রমিক পাঠাতে হবে। জর্দানের বর্তমান চাহিদা তারা যাচাই করেই নেবে। কিন্তু যে চাহিদাগুলো আমাদের মাধ্যমে যায়, প্রায়ই সেসব ক্ষেত্রে নানা অনিয়মের কথা শোনা যায়। যেমন-অনেক ক্ষেত্রেই অর্থের বিনিময়ে অদক্ষ শ্রমিককে দক্ষ হিসেবে প্রেরণ করা হয়। এতে বিদেশি কোম্পানিগুলো প্রতারিত হয় এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে আগ্রহী হয় না। বিপুল বেকারত্ব ঘোচানোর লক্ষ্যে দেশে কর্মসংস্থান বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি বিদেশে বাংলাদেশের শ্রমবাজার আরো শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। এজন্য বিদেশি শ্রমবাজারগুলোর চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে দক্ষ জনশক্তি তৈরির ওপর অনেক বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলোকে আরো তৎপর হতে হবে। একই সঙ্গে জনশক্তি প্রেরণকারী সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলোর সততা ও পেশাদারি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button