জ¦ালানি তেলের দাম সমন্বয় করা হোক
বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয়ের কথা বলে দেড় বছর আগে বাড়ানো হয় জ¦ালানি তেলের দাম। সেই থেকে দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে জ¦ালানি তেলের দাম। যদিও তখন বলা হয়েছিল, বিশ্ববাজারে দাম কমলে দেশেও কমবে। তবে সেটি আর হয়নি। গ্রাহকের কাছ থেকে নেওয়া বাড়তি অর্থে দেড় বছর ধরে মুনাফা করছে সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। এ ছাড়া জ¦ালানি তেলের শুল্ক-কর থেকে বিপুল রাজস্ব আয়ের পাশাপাশি লভ্যাংশও নিয়েছে সরকার। এতে করে লম্বা সময় ধরে মানুষ মূল্যস্ফীতির চাপে আছে। বাজারে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না সরকার। অথচ গ্যাসের দাম বাড়িয়ে মুনাফা করছে। জ¦ালানি তেলের দাম কমানোর সুযোগ ছিল। এটি কমালে বাজারে অন্যান্য পণ্যের দাম, বিশেষ করে কৃষিপণ্যের উৎপাদন ব্যয় কমত। দেশে ব্যবহৃত জ¦ালানি তেলের ৭৫ শতাংশই ডিজেল। কয়েক মাস ধরে ডিজেল বিক্রি করেও মুনাফা করছে বিপিসি। এর আগে টানা সাত বছর মুনাফা করে সংস্থাটি। জ¦ালানি তেলের দাম বাড়ানোর গন্ধ পেলেই আমাদের দেশে খুব দ্রুত কিছু পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়। বাজারে সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়ে যায়। এর ফলে জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যায় বহুগুন। উপরন্তু বাজার ব্যবস্থার সমন্বয়ের অভাবে নিজেদের উৎপাদিত পণ্য বহু গুণ দাম দিয়ে কিনতে গিয়ে জনগণ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। যেহেতু জ¦ালানি বাড়ার খবর পেয়েই পরিবহন ব্যয় বেড়ে যায় কয়েকগুণ, সেক্ষেত্রে পরিবহন ব্যয় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জিনিসপত্রের দাম বাড়ে। আর একবার কোনো কিছুর দাম বেড়ে গেলে তা পুনরায় কমার রেকর্ড আমাদের দেশে নাই বললেই চলে। হাজার আইন কানুন কিছুই তোয়াক্কা করে না পরিবহন মালিকরা ও ব্যবসায়ীরা। এভাবে দফায় দফায় জ¦ালানির দাম বাড়িয়ে ও ঋণের টাকায় দেশ চালিয়ে ক্রমবর্ধমান সমস্যার সমাধান কখনোই সম্ভব নয়। অর্থনীতির এ জটিল সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য সরকারকে অবশ্যই বেশ কিছু কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। নিতে হবে দীর্ঘ মেয়াদী ও কার্যকরী পরিকল্পনা। এবং দাম ঠিক রাখার জন্য প্রয়োজনে অতিরিক্ত পণ্যের রপ্তানি বাজার তৈরি করতে হবে। মধ্যসত্বভোগীদের কঠোরভাবে দমন না করলে কোনভাবেই সরকারের কোনো ভাল পরিকল্পনাই কখনো বাস্তবায়িত হবে না, এ বিষয়টি সরকারকে অবশ্যই আমলে নিতে হবে। যেহেতু আমাদের সরকার সবচেয়ে বেশি ভর্তুকি দিয়ে থাকে জ¦ালানি ও বিদ্যুৎ খাতে।