সম্পাদকীয়

কিউলেক্স নিধনে জোর দিন

বেড়েছে উপদ্রব

কর্তৃপক্ষের মশক নিধন কর্মসূচি অব্যাহত থাকা সত্ত্বেও রাজধানীসহ সারা দেশে কিউলেক্স মশার উপদ্রব বেড়েছে। এ মশার প্রধান প্রজননস্থল খাল ও নর্দমা। এসব পরিষ্কার করা বা সেখানে ওষুধ ছিটানো সাধারণ নাগরিকদের পক্ষে সম্ভব নয়। অতীতে কর্তৃপক্ষ করোনাভাইরাস মোকাবিলায় এবং ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে যেভাবে মানুষের পাশে ছিল, কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণে তাদের তেমন তৎপরতা লক্ষ করা যাচ্ছে না। এডিস মশা ডেঙ্গুর বাহক হওয়ায় মানুষ অতি সতর্ক থাকে। কিন্তু কিউলেক্সের ব্যাপারে তারা অনেকটাই উদাসীন। অথচ মশার এই প্রজাতি বিভিন্ন রোগের জীবাণু বহন করে। যে কোনো মশার উপস্থিতিই অস্বস্তিকর। মানুষকে রোগ-ব্যাধি ও অস্বস্তি থেকে মুক্তি দিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর বিশেষ পদক্ষেপ প্রয়োজন। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন স্থানে বিপুলসংখ্যক কিউলেক্স মশার প্রজনন ঘটছে। কাজেই মশক নিধনে দুই সিটি করপোরেশনকে জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শের বাইরে গিয়ে লোকদেখানো কর্মসূচি পালন করলে এ ক্ষেত্রে কাক্সিক্ষত সুফল মিলবে না। বস্তুত মশক নিধনের কাজটি বছরজুড়ে করা না হলে এর সুফল পাওয়া যায় না। রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় কয়েকশ কিলোমিটার বক্স কালভার্ট ও কাভার্ড ড্রেন রয়েছে, যেগুলোয় প্রচলিত পদ্ধতিতে মশার ওষুধ ছিটানো যায় না। এ ছাড়া বিভিন্ন আবর্জনায় রাজধানীর ড্রেনগুলো ভরাট থাকে; এতে পানি নিষ্কাশনে বাধা সৃষ্টি হয়। এই জমাটবদ্ধ পানিতে কিউলেক্স বংশবিস্তার করছে। মশার এসব প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস করতে কর্তৃপক্ষকে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, প্রধান সড়কের পাশে ওষুধ স্প্রে করা হলেও ভেতরের গলিতে মশক নিধন কর্মীদের খুব একটা দেখা যায় না। এ-সংক্রান্ত আরেকটি অভিযোগ হলো, এ ক্ষেত্রে অভিজাত এলাকাকে যেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়, অন্য এলাকাকে সেভাবে দেওয়া হয় না। মশা এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় উড়ে যেতে পারে। রাজধানীসহ সারা দেশের মানুষের একটি বড় অস্বস্তির কারণ মশা। কাজেই মশক নিধনে কর্তৃপক্ষকে বছরব্যাপী কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। এ ব্যাপারে নাগরিকদেরও দায়িত্ব রয়েছে। বাসাবাড়ি ও এর আশপাশ এলাকা সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। মানুষ সচেতন না হলে কেবল বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গৃহীত কার্যক্রমে কাক্সিক্ষত সুফল মিলবে না।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button