রাজধানীর ট্রাফিক পুলিশ বক্স পথচারীদের দুর্ভোগ বাড়ায়

রাজধানীর ফুটপাতে অনিয়মই যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। ফুটপাত দখল করে হকারদের কেনাবেচা নতুন নয়। এবার এর সঙ্গে যোগ হয়েছে কাঁচাবাজার। শুধু তাই না, ফুটপাতের ওপরে আছে ট্রাফিক পুলিশের বক্স। যেখানে প্রয়োজনের তুলনায় ঢাকায় রাস্তা কম। সরু রাস্তায় তাই পর্যাপ্ত ফুটপাথ রাখা যায়নি। মানুষ স্বস্তিতে হাঁটতে পারবে এমন ফুটপাথ ঢাকায় নেই বললেই চলে। কারণ সামান্য ফুটপাথ যা আছে, তাও দখল করে নিয়েছে হকাররা। সরকারের সাথে সংশ্লিষ্টরা ভাড়া দিয়ে কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজি করে ফুটপাথ থেকে। এতে রাজনৈতিক দলের নেতা ও পুলিশ সবার জড়িত থাকার কথা জানা যায়। এছাড়াও দেখা যাচ্ছে, ট্রাফিক পুলিশ নিজেদের জন্য রাস্তার ওপর স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করছে। রাস্তায় দায়িত্বকালীন নিজেদের কাজকে সহজ করার জন্য এগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। এমন যুক্তি তারা দিচ্ছে। বাস্তবে ঢাকা শহরে ট্রাফিকের জন্য নির্মিত অবকাঠামো যান চলাচল ও পথচারীদের জন্য বাধা তৈরি করছে। ঢাকা শহরে মোড়ে মোড়ে এ ধরনের কাঠামো তৈরি করতে গিয়ে রাস্তা সঙ্কোচনে পথচারী চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে। ডিএমপি থেকে প্রকাশ করা খবরে জানা যাচ্ছে, ঢাকা শহরে ১০৭টি ট্রাফিক বক্স রয়েছে। এই স্থায়ী কাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে মূলত রাস্তা, সড়ক বিভাজক ও ফুটপাথ দখল করে। এতে রাস্তা সরু হচ্ছে, পথচারী চলাচলের জায়গা সঙ্কীর্ণ হয়ে যাচ্ছে। পথচারীরা চলার পথ পাচ্ছে না। তারা বিরক্ত হচ্ছে। সিটি করপোরেশন উদ্যোগ নিয়ে এ ধরনের কয়েকটি পুলিশ বক্স গুঁড়িয়ে দিয়েছে। তবে সিটি করপোরেশন এ কার্যক্রমে বেশিদূর অগ্রসর হতে পারেনি। অস্থায়ী পুলিশ বক্সগুলো স্থায়ী কাঠামোয় রূপান্তর হতে দেখা যাচ্ছে সারা শহরে। এগুলো নির্মাণ সংস্কারে পুলিশ ও সিটি করপোরেশনের মধ্যে সমন্বয় দেখা যাচ্ছে না। রাস্তার ওপর সবচেয়ে বেশি অধিকার যাত্রী ও পথচারীর। যান চলাচল মসৃণ করা, পথচারীদের চলাচল সহজ করাই এর প্রধান উদ্দেশ্য। রাস্তার মোড়ে মোড়ে ট্রাফিক পুলিশের জন্য স্থায়ী অফিস করতে অসুবিধা হতো না যদি এখানে পর্যাপ্ত জায়গা থাকত। তাছাড়া পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ নিজেদের প্রয়োজনের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ফরমাশে এসব বক্স নির্মাণ করে। রাজধানীর অধিকাংশ ট্রাফিক পুলিশ বক্স কোনো না কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা বিজ্ঞাপনী সংস্থার অর্থায়নে করা। বক্স নির্মাণের পর সেখানে বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয়। তাই আমরা মনে করি, রাস্তায় অগ্রাধিকার হওয়া উচিত যানবাহন ও পথচারীর। অযাচিতভাবে যেন কোনো স্থানে পুলিশ বক্স তৈরি করা না হয় সে বিষয়ে সরকারের নজর রাখতে হবে।