চাঁদাবাজদের বিরেুদ্ধে কঠোর হতে হবে

মহাসড়ক, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাড়ি নির্মাণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থানে ঘটছে চাঁদাবাজির মত ঘটনা। দেশে চাঁদাবাজি একটি ভয়নক ব্যধিতে পরিণত হয়েছে। যা বেশ উদ্বেগজনক। মহাসড়কে পণ্যবাহি পরিবহনগুলোতে চাঁদাবাজির কারণে পণ্যের দাম বাড়ছে। অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের চাঁদা দিয়ে মহাসড়কে চলছে অটোরিকশা, ইজিবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশা, নছিমন-করিমন-ভটভটির মতো ধীরগতিসম্পন্ন যানবাহন। ফলে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। প্রাণ হারাচ্ছেন অনেক মানুষ। দেশের বিভিন্নস্থানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে চাঁদাবাজি হচ্ছে। ভুক্তভোগি ব্যবসায়ীরা স্থানীয় প্রশাসনকে অভিযোগ করেও সুফল পাচ্ছেন না। বর্তমান সময়ে আমাদের সমাজে চাঁদাবাজি যেন একটি সংস্কৃতিতে রূপ নিয়েছে। প্রকাশিত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে গত রোববার জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, চাঁদাবাজি একটি ভয়ানক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। পণ্য পরিবহনের সময় চাঁদা দিতে হয়, যার ফলে পণ্যের দাম বেড়ে যায়। বাড়ি নির্মাণ করতে হলেও চাঁদা দিতে হয়। কেউ যদি চাঁদার টাকা দিতে না চায়, তাহলে তাকে রড, ইট, সিমেন্ট বা বালু সরবরাহের কাজ দিতে হয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি। গরিব হকারদের কাছেও চাঁদাবাজি করা হয়, রিকশা স্ট্যান্ডে চাঁদাবাজরাও থাকে। চাঁদাবাজরা নিজ নিজ এলাকায় আধিপত্য বিস্তারে সা¤্রাজ্য গড়ে তুলেছে। এইসকল চাঁদাবাজরা প্রভাবশালী হওয়ায় প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। সম্প্রতি দেখা গেছে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার এক ইউনিয় পরিষদের চেয়ারম্যানকে চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কিন্তু এর প্রতিবাদে তার সমর্থকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মাওনা উড়ালসড়কের উত্তর পাশে সড়ক দেড় ঘন্টা অবরোধ করে রাখে। যা নিতাইন্তই উদ্বেগজনক। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায়ও একই ধরনের ঘটনা দেখতে পাই গণমাধ্যমের খবরে। গত শনিবার যাত্রবাড়ীতে আড়তের অভ্যন্তরে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভা করেছে যাত্রাবাড়ী ব্যবসায়ী মালিক বহুমুখী সমবায় সমিতি। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, আড়তে মালামাল এলেও চাঁদা দিতে হয়, বের হলেও চাঁদা দিতে হয়। ৫-৬ ধাপে চাঁদা দিতে হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা কয়েক ধাপে চাঁদা দেওয়ার কারণে মালামালের দাম বৃদ্ধি করে বেচাকেনা করতে হচ্ছে। যাত্রাবাড়ী আড়তসহ আশপাশের এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যে এ চাঁদাবাজি চলছে। প্রশাসনকে একাধিকবার জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে, অবিলম্বে আইনের আওয়াতয়া নিয়ে আসতে হবে। এদের দৃষ্টান্তমূলক শান্তি না দিলে পরিস্থিতি আরো ভয়বাহ রূপ নিবে।