দাম সমন্বয় করা জরুরি

সয়াবিন তেল
দেশে সব শ্রেণির মানুষের রান্নার প্রায় অপরিহার্য একটি উপাদান সয়াবিন তেল। বৈশ্বিক পরিস্থিতিসহ নানা কারণে গত কয়েক বছরে সয়াবিন তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে বৃদ্ধি পেলেও গত পৌনে দুই বছরে এর দাম ৫১ দশমিক ৫২ শতাংশ কমেছে। লক্ষণীয় বিষয় হলো, আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে তালমিলিয়ে দেশের বাজারে এ তেলের দাম বাড়লেও এখন কমার ক্ষেত্রে সে ধারা দৃশ্যমান নয়। দেশের বাজারে সয়াবিন তেলের দাম কমেছে মাত্র ১৭ শতাংশ। এর একটি কারণ টাকার তুলনায় ডলারের দাম বৃদ্ধি সন্দেহ নেই। আলোচ্য সময়ে ডলারের দাম ৮৬ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১২৬ টাকা। অর্থাৎ দাম বেড়েছে প্রায় ২৮ শতাংশ। আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম কমায় একদিকে আমদানি খরচ অর্ধেকের বেশি কমেছে, অন্যদিকে ডলারের কারণে দাম প্রায় ২৮ শতাংশ বেড়েছে। এ খরচ সমন্বয় করলে দেশে সয়াবিন তেলের দাম ২২ থেকে ২৫ শতাংশ কমার কথা। দাম হওয়ার কথা সর্বোচ্চ লিটারপ্রতি ১৫৪ টাকা। কিন্তু বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায়। এদিকে আসন্ন রমজান উপলক্ষ্যে সয়াবিন তেল আমদানিতে ৫ শতাংশ ভ্যাট কমানো হয়েছে। উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট ১৫ শতাংশ সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়েছে। বিপণন পর্যায়েও ভ্যাট ৫ শতাংশ তুলে দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে দেশের বাজারে সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ১৫০ টাকার কম হওয়ার কথা। কিন্তু নেওয়া হচ্ছে লিটারে ২০ টাকা করে বেশি। স্পষ্টতই এখানে কোনো কারসাজি কাজ করছে। আমরা মনে করি, এদিকে অবিলম্বে সরকারের দৃষ্টি দেওয়া উচিত। বস্তুত সয়াবিন তেল বিক্রির ক্ষেত্রে নানা ধরনের কারসাজির মাধ্যমে এমনিতেই বাড়তি মুনাফা আদায় করা হয়। এ সংক্রান্ত এক তথ্য বলছে, দেশে সয়াবিনের তুলনায় পাম অয়েল আমদানি হয় বেশি। অথচ বাজারে পাম অয়েল তেমন পাওয়া যায় না, বেশির ভাগই সয়াবিন তেল। তুলনামূলক কম দামে আমদানিকৃত পাম অয়েলের অধিকাংশই নাকি বিক্রি হয় সয়াবিনের নামে। একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সয়াবিনের সঙ্গে পাম অয়েল মিশিয়ে সয়াবিন তেল নামে বিক্রি করে। বাজারের এসব কারসাজি বন্ধ করা জরুরি। আমদানি করা কোনো পণ্যের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে কমলে দেশের বাজারে এর দাম সঠিকভাবে সমন্বয় করতে হবে। দাম কমার সুফল যেন জনগণ পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। সয়াবিন তেলের দাম আন্তুর্জাতিক বাজারের সাথে দ্রুত সমন্বয় করা হোক।