রাজধানীতে তীব্র যানজট, ঈদের বাজারে ভোগান্তি

পবিত্র রমজান শুরুর পর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে নেমেই ভোগান্তিতে পড়েন নগরবাসী। বিশেষ করে অফিসগামী মানুষকে নাকাল হতে হচ্ছে বিভিন্ন সড়কে যানজট ও দীর্ঘ ট্রাফিক সিগনালের কারনে। ফলে অনেকেই সময়মতো অফিসে পৌঁছাতে পারছেন না। সকালে যানজটের তীব্রতা বেশি থাকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে-সঙ্গে যানজট কিছুটা কমলেও বিকেলে অফিস ফেরত মানুষের চাপে ফের দেখা যায় স্থবিরতা। যানজটের কারণে নষ্ট হচ্ছে কর্মঘণ্টা। যার কারনে দীর্ঘক্ষণ যানজটে আটকে থাকা লোকজন গন্তব্যে পৌঁছতে বাহন ছেড়ে পায়ে হেঁটে রওনা দেন। বিশেষ করে যেসব এলাকায় মার্কেট বা শপিং মল রয়েছে; সেসব এলাকা ঘিরে রাস্তাগুলোতে যানবাহন চলে ধীরগতিতে।
পুলিশের কড়াকড়ির পরও অনেক রাস্তার পাশে ফুটপাতে বা রাস্তার উপর দোকান বসার কারণে যানজটে ভোগান্তি বেড়েছে। বিশেষ করে ইফতারসামগ্রীর দোকান রাস্তার উপরে বসানোর কারণে অনেক রাস্তায় যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। তাছাড়া, রাজধানীর বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সড়কে দীর্ঘদিন ধরেই চলছে বিভিন্ন সেবা সংস্থার খোঁড়াখুঁড়ি। রাজধানীর যানজট নিয়ন্ত্রণে বরাবরের মতো পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে ‘বিশেষ পরিকল্পনা’ নেয়া হলেও সুফল মিলছে না। ইফতারির আগের পরিস্থিতি সামাল দিতে ডিএমপির পদস্থ কর্মকর্তারা রাস্তায় নেমে সরাসরি তদারকি করলেও গাড়ির চাপ সামলানো কঠিন হয়ে পড়ে। অবশ্য মোটরসাইকেল আরোহীদের চেয়ে বাসের যাত্রীদের ভোগান্তি বেশি হচ্ছে। এ যানজটের কারণে নানামুখী ক্ষতিতে পড়ছে অর্থনীতি। এছাড়াও মানুষের স্বাস্থ্যগত ক্ষতি হয়। সাইকোলজিক্যাল ইমপ্যাক্টও রয়েছে। মনস্তাত্বিক ক্ষতিও কিন্তু একটি বড় ক্ষতি। বর্তমানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সড়কে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ। রোজায় সড়ক যানজটমুক্ত রাখতে সবার সহায়তা প্রয়োজন। হকারদের হাত থেকে ফুটপাত উদ্ধারের বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের দ্রুত ভাবতে হবে। তা না হলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে। সড়ক সংস্কারের প্রয়োজন আছে, তবে নাগরিক দুর্ভোগের বিষয়টিও বিবেচনায় নিতে হবে। বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয় ও সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে কাজগুলো এমনভাবে করতে হবে, যাতে নাগরিক দুর্ভোগ যথাসাধ্য কমিয়ে আনা যায়। পাশাপাশি ট্রাফিক পুলিশকে অবৈধ পার্কিং নিয়ন্ত্রণসহ দায়িত্ব পালনে আরো নিষ্ঠাবান হতে হবে। আমরা আশা করি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মানুষের ভোগান্তি আমলে নেবেন।