তীব্র গরমের সাথে বাড়ছে ডায়রিয়া

চলমান তাপদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন। উত্তাপ ছড়াচ্ছে সূর্য। তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছুঁইছুঁই। গত এক দশক থেকেই এপ্রিল মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি থাকছে তাপমাত্রা। এপ্রিল মাসের গড় স্বাভাবিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩.২। তবে এবার এপ্রিলে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। অধিকাংশ জায়গায় তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রির ওপরে থাকছে। অসহনীয় গরমে এক পশলা বৃষ্টির জন্য হাঁসফাঁস করছে জনজীবন। এরই মধ্যে কয়েক দফায় হিট অ্যালার্ট জারি হয়েছে দেশে। মাসের মাঝামাঝি এসে প্রতিদিন মরুর দেশগুলোর তাপমাত্রাকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছে দেশের কোনো কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা। এতে বাড়ছে পানিবাহিত রোগ। ফলে বেড়েছে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়াসহ নানা রোগের প্রকোপ। বিশেষ করে বেড়েছে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে নানা বয়সী রোগী। তাদের মধ্যে শিশু ও বয়স্কদের সংখ্যা বেশি। যাদের বেশীরভাগই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। হঠাৎ করে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার শয্যা সংকট দেখা দিচ্ছে হাসপাতালগুলোতে। বাধ্য হয়ে অনেককে হাসপাতালের মেঝে ও করিডোরে বিছানা পেতে নিতে হচ্ছে চিকিৎসা। এক প্রতিবেদনে দেখা যায় গত এক সপ্তাহ ধরেই ধারাবাহিকভাবে ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। আক্রান্তদের ৭০ শতাংশই শিশু। হঠাৎ করেই রোগী বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। বছরের এ সময়টায় রোটা ভাইরাসসহ জীবাণু বেড়ে যায়। যে কারণে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয় মানুষ। এই মহামারীতে সবথেকে বেশী আক্রান্ত হচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা পটুয়াখালী। এক প্রতিবেদনে দেখা যায় গত জানুয়ারি থেকে সোমবার পর্যন্ত জেলায় ৫ হাজার ৬৯৫ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। আগের দিন সকাল ৮টা থেকে গতকাল একই সময় পর্যন্ত ১১৬ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন বিভিন্ন হাসপাতালে। এ নিয়ে এক সপ্তাহে ৭৫৮ জন এবং গত এক মাসে ২ হাজার ৮৫১ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ২৬১ জন। এই ডায়রিয়ায় উচ্চঝুঁকিতে আছে শিশুরা। চলমান এই তাপপ্রবাহসহ জলবায়ু পরিবর্তনের আরো ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শিশুদের রক্ষা করার জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার এখনই সময়। অস্বাভাবিকভাবে তাপমাত্রা বাড়তে থাকায় আগে শিশু ও সবচেয়ে অসহায় জনগোষ্ঠীকে নিরাপদে রাখার প্রতি নজর দিতে হবে। তাপপ্রবাহ থেকে শিশু ও অসহায় জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষার জন্য সম্মুখসারির কর্মী, বাবা-মা, পরিবার, পরিচর্যাকারী ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে কার্যকরী পদক্ষেপ।