ব্যবসায়ীদের দখলে ফুটপাত, দুর্ভোগে নগরবাসী
ফুটপাত বা সড়ক দখল এখন শুধু রাজধানী ঢাকার একার সমস্যা নয়। দেশের প্রায় সব শহর-নগরেই চলছে দখলদারিত্বের রাজত্ব। যে ফুটপাতে পথচারী চলার কথা সেখানে বসেছে দোকানপাট। পথচারীরা হাঁটছেন সড়কে। অবৈধ পার্কিং আর দখলে সড়কের বড় একটি অংশই হয়ে পড়ে চলাচলের অনুপযোগী। ফলে দেখা দেয় যানজট এছাড়াও ভাসমান দোকানে চারপাশে গাদাগাদি ভিড়। এসব দোকানের কোনো বৈধতা না থাকা সত্ত্বেও অদৃশ্য শক্তির কারণে দোকান মালিকরা ব্যবসা করে যাচ্ছেন বুক উঁচিয়ে। এতে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন ঢাকায় বসবাসকারীরা। তাদের স্বাভাবিক চলাফেরায় বিঘœ ঘটার পাশাপাশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন তারা। এছাড়াও এসব দোকানের কারণে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। মাঝে মাঝে উচ্ছেদ করা হলেও, উচ্ছেদের ২৪ ঘণ্টা না পেরুতেই দখল হয়ে যাচ্ছে ফুটপাত। দখলকারীদের এ ধরণের শক্তিপ্রদর্শণ এই ইঙ্গিত দেয় যে, তাদের পেছনে প্রশাসনের প্রচ্ছন্ন সহযোগিতা রয়েছে। দেশের প্রায় সব জায়গায় ফুটপাত নিয়ে নানান বাণিজ্য হয়। সেখানে যারা দোকান নিয়ে বসে তাদের কাছ থেকে ক্ষমতাসীন দলের একশ্রেণির নেতাকর্মী নিয়মিত চাঁদা নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। সেই চাঁদার টাকায় অনেকেই ভাগ পান। আর এই বাণিজ্যের জোরেই টিকে থাকে দখলদারিত্ব। ফুটপাতকে নাগরিকদের ফিরিয়ে দেয়া প্রশাসনের কাজ এবং জরুরি কাজ। প্রশাসনিক ঔদাসিন্যতার কারণে নাগরিক অধিকার নষ্ট হতে পারে না। দখলমুক্ত ফুটপাত নাগরিক অধিকার। রাজনৈতিক দলের নেতারা নির্বাচনের আগে এসব দখল মুক্ত করে হকারদের পুনর্বাসন করার অঙ্গীকার করলেও নির্বাচনের পর তারা নিরব ভূমিকা পালন করেন। যে শহর যত বেশি নিরাপদ ও সুপ্রশস্ত ফুটপাতযুক্ত সড়ক তৈরি করে, সেই শহর তত বেশি প্রাণবন্ত। তবে আমাদের দেশে পথচারীদের হাঁটার জায়গা দখল করে নানা রকমের বাজার সাজিয়ে রেখেছে অবৈধ দখলদাররা। ফুটপাত দিয়ে হাঁটার মতো পরিস্থিতি নেই সেখানে। তাই বাধ্য হয়ে পথচারীরা নেমে এসেছেন মূল সড়কে। যে কারণে যান চলাচলে বিঘœ ঘটছে, সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। সেই সঙ্গে তো থাকছে পথচারীদের দুর্ঘটনার আশঙ্কাও। তাই টেকসইভাবে দখলদারিত্বের অবসান ঘটাতে হলে চাঁদা বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে। এর সঙ্গে যে বা যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। পথচারীদের নির্বিঘেœ ফুটপাথে হাঁটা ও সড়কে যানজটের অবসান ঘটানোর জন্য যা করা দরকার তা-ই করতে হবে।