দেশের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে হবে

বাংলাদেশ কৃষিনির্ভর দেশ। কৃষি দেশের অর্থনীতির প্রধান কর্মকা- এবং জীবনীশক্তি। কৃষিকে বাদ দিয়ে এ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। কয়েক বছর ধরে আমাদের প্রধান খাদ্যশস্য চাল উৎপাদনে প্রবৃদ্ধির হার নিচে নেমে যাচ্ছে। ফলে খাদ্যশস্যটি আমদানি করতে হচ্ছে। আমাদের খাদ্যে স্বনির্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ব্যাহত হচ্ছে। দেশের ক্রমবর্ধমান জনগণের চাহিদা পূরণে ধান উৎপাদনও বাড়াতে হবে। কেননা, ধান ও চাল উৎপাদন বাড়াতে না পারলে ভবিষ্যতে খাদ্যনিরাপত্তা সংকটে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। চালের উৎপাদন প্রবৃদ্ধি এ মাত্রায় শ্লথ হয়ে আসার পেছনে বিশেষজ্ঞরা দায়ী করছেন আবাদি জমি হ্রাস ও কৃষিতে নতুন জনশক্তি যুক্ত না হওয়াকে। এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য হলো কৃষি খাতে কাঠামোগত পরিবর্তন ঘটছে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে। আবাদি জমির পরিমাণ কমছে। উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি ও ধানের কাক্সিক্ষত মূল্য না পাওয়ায় কৃষক অন্য ফসলে ঝুঁকছেন। আবার কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণের গতিকে ধীর করে তুলছে ডলারের বিনিময় হারের অস্থিরতা। এ অস্থিরতার কারণে যান্ত্রিকীকরণে উৎপাদন ব্যয় কমার কথা থাকলেও সে সুযোগ নিতে পারছেন না কৃষক। এ অবস্থায় কৃষি ছেড়ে যাচ্ছেন অনেকেই। ডলারের বিনিময় হারের অস্থিরতার কারণে কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণের গতিকে ধীর করছে। এ অস্থিরতার ও কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যয় বাড়ার কারণে যান্ত্রিকীকরণে উৎপাদন ব্যয় কমার কথা থাকলেও সে সুযোগ নিতে পারছেন না কৃষক। বর্তমানে অনেকেই কৃষি ছেড়ে যাচ্ছেন অন্য পেশায়। ফলে চালের উৎপাদন প্রবৃদ্ধি কমে আসছে। ক্রমেই জমির উর্বরতা হ্রাস পাচ্ছে , এমনকি চাষের জন্য পানির জোগানও কমছে। সেই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত পরিস্থিতি কৃষিকে হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে। এসব পরিস্থিতি মাথায় রেখে সরকারকে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে উদ্যোগ নিতে হবে। উচ্চ ফলনশীল ধানের আবাদ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়াতে হবে। দেশের চাল উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি বাড়াতে কৃষকের কৃষি উপকরণ ব্যয় কমাতে হবে। এ খাতে সরকারি প্রণোদনা ও ভর্তুকি বাড়াতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। কৃষি জমির বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে প্রয়োজন দক্ষ ও শিক্ষিত তরুণ উদ্যোক্তা। তাদের মাধ্যমে কৃষি একটি গতিশীল খাতে পরিণত হবে, যা দেশের অর্থনীতিতে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে বলে আশা করা যায়।