সম্পাদকীয়

ভেজাল ওষুধে হুমকিতে দেশ! আইন প্রয়োগে কঠোর হোন

অনাকাক্সিক্ষত ভাবে মানুষ নানা অসুস্থতায় ভোগে। আর অসুস্থতা থেকে স্বস্তির জন্য মানুষ বিভিন্ন মেডিসিন ব্যবহার করে থাকেন। মেডিসিন ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যথানাশক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মিলে। প্রাত্যহিক জীবনে মানুষ কোনো না কোনোভাবে ওষুধের সাথে জড়িত থাকে। যদি ওষুধে অনিয়ম আর ভেজাল মিশ্রিত থাকে তাহলে বিষয়টা কেমন দাঁড়ায়? নিশ্চয় হতাশার বিষয় এটি। এমনি একটি অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। আটা, ময়দা, সুজি দিয়ে সাভার ও কুমিল্লার কারখানায় বানানো হতো নকল অ্যান্টিবায়োটিক ট্যাবলেট-ক্যাপসুল। এরপর সেগুলো ট্রাক বা পিকআপে বরিশালে মজুত করা হতো। সেখানে গুদামজাত করে পরে ধীরে ধীরে দেশের বিভিন্ন জেলায় কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে সরবরাহ করত সংঘবদ্ধ চক্র। ১০ বছর ধরে এ প্রতারণা করে আসছিল চক্রটি। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)-এর অভিযানে এ চক্রের পাঁচজন গ্রেপ্তার হলে উঠে আসে প্রতারণার চিত্র। শুধু অ্যান্টিবায়োটিক নয়, লিভার সিরোসিসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত অ্যালবুমিন ইনজেকশন নিয়েও চলছে ভেজাল সিন্ডিকেট। কিন্তু এ নিয়ে নেই কোনো উদ্যোগ। ইনজেকশন পুশ করার পরই অনেক সময় রোগী মারা যাচ্ছে। দোষ গিয়ে পড়ছে ডাক্তারদের ঘাড়ে। শুধু এ হাসপাতাল নয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ), ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ অন্যান্য হাসপাতালেও ভেজাল অ্যালবুমিন নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় চিকিৎসকদের। ভেজাল ওষুধ তৈরির অপরাধে সর্বোচ্চ ১০ বছরের জেল ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে ওষুধ ও কসমেটিক আইন-২০২৩ পাস করেছে সরকার। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর ১ হাজার ৬৯৬টি মোবাইল কোর্ট, আটটি ড্রাগ কোর্ট ও ৪৪৭টি ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে ১ কোটি ৭৩ লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। তবে ভেজাল ওষুধের জন্য জেলে দেওয়ার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। অনেক প্রতারণা চক্রকে প্রশাসন চিহ্নিত করেও শুধু টাকা জরিমানা করছে, জেলে আনা হয়নি ফলে এরা আবারো ভেজাল ওষুধ তৈরিতে জড়িয়ে যাচ্ছে। দেশ ও মানুষকে রক্ষা করার জন্য সরকার এবং প্রশাসনকে আরো কঠোর আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। ভেজাল ওষুধ তৈরির মত এমন জঘন্য কাজের সাথে জড়িত চক্রকে আইনের আওতায় আনতে হবে। এছাড়াও যেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে ওই সকল প্রতিষ্ঠানকে বন্ধ করে দেওয়া হোক। ভেজাল ওষুধ মুক্ত দেশ গড়-ন বিনিময়ে অকাল মৃত্যুরোধ করুন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button