অবহেলিত চিকিৎসা সেবায় মরছে রোগী
অপ্রত্যাশিত বা অনাকাক্সিক্ষতভাবে মানুষ নানা অসুস্থতায় ভোগে। অসুস্থতা থেকে স্বস্তি পেতে প্রয়োজন সঠিক চিকিৎসা ব্যবস্থা। সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমেই অসুস্থতা থেকে মুক্তি পায় রোগীরা। একটু খানি স্বস্তির জন্য মানুষ তার সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করে চিকিৎসার জন্য। আর যখন নিজেদের সর্বস্ব দিয়েও সঠিক চিকিৎসার নামে অবহেলিত চিকিৎসা হয়ে রোগী মারা যায় তখন এর দায়ভার কে নিবে? সম্প্রতি এমনি একটি অভিযোগ উঠেছে রাজধানী পল্লবীর ইসলামি ব্যাংক হাসপাতাল অ্যান্ড কার্ডিয়াক সেন্টারের বিরুদ্ধে। অভিযোগ উঠেছে, এক ভুক্তভোগী এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ভর্তির পরে সারাদিনে অসুস্থতা থেকে নিয়ন্ত্রণে ছিলেন এবং রাতে আলট্রাসনোগ্রাফি করলে দেখা যায় পেটে ১৬ সপ্তাহের সন্তানও সুস্থ আছে। কিন্তু পরের দিনেই তার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। কিন্তু সারারাতে ডেকেও কোনো ডাক্তারকে রোগীর কাছে আনা যায়নি। এতে তার অবস্থা খারাপ হলে অন্য হাসপাতালে নিতে পারে নাই। এরপর পেটের বাচ্চাটা মারা যায়। ভুক্তভোগীর স্বামী অভিযোগ করেন, হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা ও চিকিৎসকদের অবহেলায় প্রাণ হারায় তার স্ত্রী, মা হারা হয়েছে তার চার বছরের ছেলে। এসব ক্লিনিকে সেবার নামে চলছে ব্যবসা। আর এর বলি হতে হচ্ছে রোগীদের। অতি মুনাফালোভী এই ব্যবসায়ীদের ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হচ্ছে অসংখ্য পরিবার। এর বাইরে অপচিকিৎসায় অঙ্গহানি, সেবা নিতে এসে তিক্ত অভিজ্ঞতা তো আছেই। দেশের স্বাস্থ্যসেবায় আস্থাহীনতার কারণে বিদেশগামী রোগীর ভিড় বাড়ছে। ভারত, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দূতাবাসে মেডিকেল ভিসার জন্য যাওয়া মানুষের ভিড় ঊর্ধ্বমুখী। দেশের সরকারি হাসপাতালে অব্যবস্থাপনা, সংকট, প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা। বেসরকারিতে রয়েছে আস্থার সংকট, প্রতারণার ফাঁদ। মনোযোগ দিয়ে রোগীর কথা না শোনায় বেশ কিছু চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। ২০২২ সালের ২৫ মে আকস্মিক ঘোষণা দিয়ে অবৈধ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযানে নামে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে অভিযান অব্যাহত রাখার সুপারিশ করেছিলেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিশিষ্টজনরাও। কিন্তু সেই অভিযানও পর্যায় ক্রমে স্থগিত হয়ে যায়। আমাদের ঘনবসতির দেশে যদি চিকিৎসা সেবাই এমন অবহেলিত হতে হয় রোগীদের তাহলে স্বস্তির জন্য কোথায় যাবে রোগীরা? আমরা চাই অবৈধ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযান আবারো চালু হোক। চিকিৎসা মানুষের মৌলিক অধিকার এই অধিকার থেকে যেন কেউ বঞ্চিত না হয় সেই প্রত্যাশা করি আমরা সরকারের থেকে। চিকিৎসা ক্ষেত্রে অনিয়ম কারিদের আইনের আওতায় আনুন, বিনিময়ে একটি অসুস্থ মানুষের মুখে হাসিয়ে ফুটে তুলুন।