সম্পাদকীয়

ত্রাণ তৎপরতা জোরদার করুন

উত্তরবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি

উজান থেকে নেমে আসা ঢলে দেশের উত্তরাঞ্চলের নদ-নদীতে পানি বাড়া অব্যাহত রয়েছে। এতে রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা ও সিরাজগঞ্জের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। নতুন করে পানিবন্দী হয়েছে হাজার হাজার মানুষ। অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে পরিবার নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন। এদিকে তিস্তার পানিতে ডুবে গেছে লালমনিরহাটের রেললাইন। উজানের পাহাড়ি ঢল আর কয়েক দিনের টানা ভারী বৃষ্টিতে তিস্তার পানিপ্রবাহ বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় লালমনিরহাট-সান্তাহার রেলরুটের লালমনিরহাট সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের রতিপুর এলাকায় অর্ধকিলোমিটার রেলপথ ডুবে যায়। পানির ¯্রােতে ভেসে যায় রেললাইনের পাথর। ঝুঁকি নিয়ে ধীরগতিতে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রেখেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এমন পরিস্থিতিতে দুর্ভোগে পড়েছে সেসব এলাকার মানুষ। যেহেতু বন্যাকবলিত প্রত্যন্ত অঞ্চলে সুপেয় পানি ও খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে, সেহেতু এসব অঞ্চলে জরুরিভিত্তিতে দৃষ্টি দেওয়া দরকার। নানা সমস্যার কারণে অনেক প্রত্যন্ত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। কাজেই যত দ্রুত সম্ভব পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধারের চেষ্টা চালাতে হবে। এর আগে নোয়াখালী, ফেনী এলাকায় বন্যার সময় বন্যাকবলিত মানুষের জন্য আয়োজিত গণত্রাণ কার্যক্রমে মানুষের ঢল নামে। এবার সেরকম কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। আমরা আশা করি, আগের বারের মতো এবার ত্রাণ তৎপরতা চালানো হবে। এছাড়া ত্রাণ কার্যক্রম সুষ্ঠু হওয়ার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত ত্রাণের সুষ্ঠু বণ্টনে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। এখন অনেক এলাকায় জনপ্রতিনিধিরা জনসমক্ষে আসছেন না। এ অবস্থায় স্থানীয় প্রশাসন, সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর সমন্বয়ের ক্ষেত্রে যাতে কোনো সমস্যা সৃষ্টি না হয়, কর্তৃপক্ষকে সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। বন্যার পানি নামার পর যেসব সমস্যা সৃষ্টি হয়, তা বহুল আলোচিত। কাজেই সেসব সমস্যার সমাধানে পর্যাপ্ত আগাম প্রস্তুতি নেওয়া দরকার। পানিবাহিত রোগ, খাদ্য ঘাটতি-এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার পাশাপাশি মানুষের ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর সংস্কারে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button