সম্পাদকীয়

সক্রিয় হচ্ছে শীর্ষ সন্ত্রাসীরা, প্রসাশসনকে তৎপর হতে হবে

ধীরে ধীরে জনসমক্ষে ফিরে এসেছে কয়েকজন আত্মগোপনকারী শীর্ষ সন্ত্রাসী। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সুযোগ নিয়ে শীর্ষ সন্ত্রাসীরা জামিন পেয়ে আবারও সংগঠিত হচ্ছে এবং এলাকাভিত্তিক আধিপত্য বিস্তার করতে চাইছে। এরই মধ্যে কারাগার থেকে জামিনে বের হওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্য তৎপরতা শুরু করেছে। একইভাবে আত্মগোপনে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসীদের কেউ কেউ এরই মধ্যে প্রকাশ্যে এসেছে। অপরাধের পুরোনো সা¤্রাজ্য ফিরে পেতে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় মহড়া দেয়ার পাশাপাশি চাঁদা চেয়ে ব্যবসায়ীদের হুমকি দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। ঢাকায় গত মাসে জোড়া খুনের একটি ঘটনায়ও এক শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম এসেছে। পুরোনো অপরাধ সা¤্রাজ্য পুনঃস্থাপনের চেষ্টায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মহড়া দিচ্ছে তারা। ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদা দাবি এবং হুমকি দেওয়ার অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে। গত মাসে ঢাকায় ঘটে যাওয়া এক জোড়া খুনের ঘটনায়ও এক শীর্ষ সন্ত্রাসীর নাম উঠে এসেছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মধ্যে অন্তত ছয়জন জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। আগের সরকার যাদের ধরেছে, এখন তাদের মুক্তি! তারা তো স্বীকৃত কিলার ও সন্ত্রাসী, তাদের কোন বিবেচনায় ছাড়া হলো? এর দায়ভার কে নেবে? তাদের ছেড়ে রাখলে দেশের আইনশৃঙ্খলা তো বনবাসে চলে যাবে। পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর দেশের সর্বসাধারণ রাষ্ট্র গঠন ও পরিবর্তনের আশা করেছিল। আর এখন আমরা দেখছি ১০-২০ খুনের আসামি, যাদের বিরুদ্ধে এখনও ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি রয়েছে, তারা জামিনে মুক্ত। এটাই কি আমাদের রাষ্ট্র গঠন ও পরিবর্তনের আশার আউটকাম পরিণতি? তাহলে কি এক জালিম গ্রুপের পতন, আরেক জালিম গ্রুপের আগমন ঘটবে? ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবে একদল স্বৈরশাসকের পতন/পলায়ন ঘটেছে, যা সামান্য ব্যাপার নয়। স্বৈরশাসকরা গেলেও স্বৈরশাসনের ব্যবস্থাপনা কিন্তু পালায়নি। আমলাতন্ত্র ঠিকই রয়ে গেছে, যদিও শুধু বড় রকমের একটু ধাক্কা খেয়েছে মাত্র। ঢাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসীদের পুনঃতৎপরতায় ডিস-ইন্টারনেট ব্যবসা, পরিবহণ, দরপত্র নিয়ন্ত্রণ, ফুটপাত, বাজার, এবং জমি দখলসহ নানা খাতে চাঁদাবাজি নতুন করে বৃদ্ধি পেয়েছে। পুলিশ বলছে, সন্ত্রাসীরা আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত এবং তাদের হাতে আগের সরকারের পতনের সময় লুট হওয়া অস্ত্রও পৌঁছেছে। শীর্ষ সন্ত্রাসীদের অনেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করেছেন। বিশেষ করে মতিঝিল, মগবাজার, মোহাম্মদপুর ও মিরপুর এলাকায় এ প্রবণতা বেশি। পরিবর্তিত পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের অনেকে অবস্থা বুঝে এখন রাজনৈতিকভাবে পরিচিতি পাওয়ার চেষ্টা করছে। এ কারণে রাজনৈতিক দল ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তাদের বিষয়ে কঠোর অবস্থানে থাকতে হবে।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button