সম্পাদকীয়

খোঁড়াখুঁড়িতে ক্ষতবিক্ষত ঢাকার উত্তর সিটি

উন্নয়নের নামে রাজধানীর ওয়ার্ডগুলোতে ১২ মাসই চলে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি। একদিকে সমন্বয়হীনভাবে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির পর মেরামত না করা, অন্যদিকে ভাঙাচোরা সড়ক বছরের পর বছর সংস্কার না করায় নাকাল রাজধানীবাসী। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে এমন অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ শহরে জনসংখ্যার অনুপাতে যতটা নাগরিক সেবা থাকা দরকার, তার যথেষ্ট ঘাটতি আছে। বলা যায়, শহর হিসেবে বাসযোগ্যতা হারাতে বসেছে ঢাকা। বিষয়টিকে আরও বেশি ত্বরান্বিত করছে অনুন্নত সড়ক ও সড়কে অব্যবস্থাপনা। সারা বছর এ শহরে সড়কে খোঁড়াখুঁড়ি লেগেই থাকে। দুর্ভোগ কমাতে উন্নয়ন তো হতেই হবে, কিন্তু সেই উন্নয়নকাজ বরং আরও দুর্ভোগ বাড়িয়েই দিচ্ছে। রাস্তা খোঁড়াখুঁড়িতে মানা হয় না কোনো নীতিমালা, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কিছু এলাকার লাখ লাখ মানুষ চরম ভোগান্তিতে আছেন রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কারণে। কোথাও সড়ক সংস্কারের কাজ করছে খোদ সিটি করপোরেশন। কোথাও আবার ঢাকা ওয়াসার পানি সরবরাহের সংযোগ স্থাপন এবং অন্যান্য সেবা সংস্থার উন্নয়ন কাজের জন্য কেটে রাখা হয়েছে সড়ক। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অনেক এলাকার সড়কের পিচ উঠে খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। মোহাম্মদপুর, মিরপুর, বড়বাগ, পশ্চিম কাজীপাড়া, পীরেরবাগ, পশ্চিম আগারগাঁও, মণিপুর এসব এলাকার ছোট-বড় সড়ক ও অলিগলিতে খনন করছে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা। কোনো কোনো সড়ক চার-পাঁচ মাস আগে কাটাকাটি করা হয়েছে, যা এখনো মেরামত করা হয়নি। সড়কের কিছু অংশ খনন করা হয়েছে, অন্য অংশে নর্দমা নির্মাণের জন্য কংক্রিটের পাইপ রাখা হয়েছে। ফলে হাঁটাচলাও কঠিন হয়ে পড়েছে। এ দুর্ভোগ নিয়ে উত্তর সিটি করপোরেশনের কোনো মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না। জোড়াতালি দিয়ে চলছে সড়ক উন্নয়নের কাজ। খোঁড়াখুঁড়িতে কোনো লাগাম নেই। এ নিয়ে স্পষ্ট নীতিমালা থাকলেও তা কেউ মানছে না। মানার ব্যাপারে উদ্যোগও নেই। তাই দুর্ভোগ কমাতে যে রাস্তাগুলো খোঁড়াখুঁড়ির অবস্থায় রয়েছে সেগুলো সংস্কার করে নতুন কাজে এগিয়ে যেতে হবে। জনদুর্ভোগ লাঘব ও সরকারি টাকা অপচয় বন্ধ করতে হবে। বর্ষাকালে খোঁড়াখুঁড়ি পুরোপুরি বন্ধ রাখতে হবে। কোথাও রাস্তা খুঁড়তে হলে ঢাকা ওয়াসা, ডিপিডিসি, ডেসকো, সিটি করপোরেশন, বিটিসিএল, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি- এসব সংস্থার সঙ্গে আলোচনা ও সমন্বয় করে উপযুক্ত সময়ে খনন কাজে হাত দেওয়া চাই। সেটি কোনোক্রমেই বছরে একবারের বেশি নয়।

 

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button