ব্যবসাখাতে গুরুত্ব দিন

ঝুঁকিতে অর্থনীতি
দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, শ্রমিক অসন্তোষ, সামাজিক অস্থিরতা, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিসহ নানা কারণে শিল্প ও ব্যবসার পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে ক্রমাগত কমছে শিল্পোৎপাদন। রপ্তানি আয়েও তার প্রভাব পড়ছে। এই অবস্থায় ব্যাংকিং খাতের কিছু কর্মকা-ও ব্যবসা খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ঋণের সুদহার ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। খেলাপি ঋণের পরিবর্তিত নীতিমালা সেই নেতিবাচক প্রভাবকে আরো বেগবান করছে। এই অবস্থায় ব্যবসায়ীরা ব্যাপক হারে ঋণখেলাপি হয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন। অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও অন্তর্বতীঅ সরকার দেশের শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য তথা অর্থনীতির গতিশীলতা ধরে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে। জানা যায়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকটে পোশাক খাতে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ উৎপাদন কমেছে। স্টিল কারখানায় উৎপাদন কমেছে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ। সিরামিক কারখানায় উৎপাদন অর্ধেকে নেমেছে। ডিজেল ব্যবহার ও শ্রমিকদের বাড়তি কাজের জন্য খরচ বেড়ে গেছে। পল্লী বিদ্যুতের অধীন ক্ষুদ্র শিল্প সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে প্রায় ৪০ শতাংশ ক্ষুদ্র শিল্প বন্ধের পথে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকটে শিল্প খাতে বিপর্যয় নেমেছে। গত কয়েক মাসে কয়েক শ কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। রপ্তানি আয় কমছে। বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান থমকে আছে। এমন পরিস্থিতি দেশের অর্থনীতির জন্য মোটেও সুখকর নয়। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে অনেক উদ্যোক্তাও নানা ধরনের ভয়ভীতির মধ্যে রয়েছেন। স্বচ্ছন্দে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করতে পারছেন না। এই অবস্থায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্ত পূরণে আগামী মার্চের মধ্যে সব ধরনের ঋণ শ্রেণীকরণ নীতিমালা কঠোর করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এত দিন ছয়টি কিস্তি না দিলে একজন গ্রাহক খেলাপি হতেন। সেপ্টেম্বর থেকে তা তিন কিস্তিতে নামিয়ে আনা হয়েছে। আগামী মার্চ থেকে একটি কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হলেই খেলাপি করা হবে। এসব কারণে দেশে খেলাপি ঋণ অনেক বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আমরা চাই, দেশে ব্যবসা ও শিল্প বান্ধব পরিবেশ তৈরি হোক।