সম্পাদকীয়

বিভিন্ন অবরোধে অচল ঢাকা; অপসংস্কৃতিকে বন্ধ করতে হবে

প্রতিদিনই শহরের কোথাও না কোথাও বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ সড়ক বন্ধ করে কর্মসূচি পালন করেন। ফলে ঢাকা শহরের জনজীবন প্রায় নিশ্চল হয়ে পড়েছে। কিছুদিন আগে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে রাজধানীর সায়েন্সল্যাব এলাকায় ব্লকেড কর্মসূচি পালন করেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। একইদিনে সরকারি চাকরিতে বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে শাহবাগ এলাকায় মহাসমাবেশের ডাক দেন আন্দোলনকারীরা। এতে বিভিন্ন সড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। বেলা ১১টার দিকে ঢাকা কলেজ থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সায়েন্সল্যাব মোড়ে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। তাদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন গঠন না করা পর্যন্ত রাস্তা ছাড়বে না শিক্ষার্থীরা। এতে ব্যস্ততম সাইন্সল্যাব মোড় অবরোধে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয় আশপাশের সড়কে। চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে নিউমার্কেট, নীলক্ষেত, সায়েন্সল্যাব, মিরপুর রোড, এলিফ্যান্ট রোড সংলগ্ন সব রাস্তায় যানজট তৈরি হয়েছিল। ভোগান্তিতে পড়েছিল সাধারণ যাত্রী ও পথচারীরা। গত বুধ ও বৃহস্পতিবার নগরবাসী একই রকম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের অবরোধে। সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ঢাকার মহাখালীতে বৃহস্পতিবার সকাল নয়টা থেকে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেছেন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকেরা। অবরোধের এক পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাড়ি ও আশপাশের কয়েকটি জায়গায় ভাঙচুর করা হয়। আগারগাঁওয়ে সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত অবরোধ করেন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকেরা। বছিলা, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, গাবতলী, ডেমরাসহ বিভিন্ন জায়গায় রিকশাচালকেরা অবস্থান নেওয়ায় নগরজুড়ে অসহনীয় যানজটের সৃষ্টি হয়। গত বৃহস্পতিবার অন্তত ১২টি পয়েন্টে তাদের অবস্থানের ফলে কার্যত অচল হয়ে পড়ে ঢাকা। সকাল ৯টা থেকে ৬ ঘণ্টা ধরে মূল অবস্থানটি ছিল মহাখালীতে। এদিকে অবরোধের কারণে ছয় ঘণ্টা ধরে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় দেখা দেয় শিডিউল বিপর্যয়। মহাখালী মোড় হয়ে যান চলাচল বন্ধ থাকায় সংলগ্ন পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে যানজট। এতে বিপাকে পড়েন বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীরা। বিশেষ করে অসুস্থ ও বয়স্করা অসহনীয় দুর্ভোগের শিকার হন। কিছু থেকে কিছু হলেই সড়ক অবরোধ করে দাবি আদায়ের যে অপসংস্কৃতি তৈরি হয়েছে তা বন্ধ করতে হবে। আগে দাবি দাওয়া ছিল প্রেসক্লাব কেন্দ্রিক। সেখানে সবাই তাদের দাবি আদায়ের জন্য প্লে কার্ড বা ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে দাঁড়াতেন। এখন সবাই সড়ক অবরোধ করে। এই সংস্কৃতি বন্ধ না হলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি থেকে যাবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button