হুন্ডি বন্ধ করতে হবে

বাড়ছে রিজার্ভ
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও বেড়ে ২১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) ঋণের ৫০ কোটি ডলার যোগ হওয়ার পর রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২১.৩৩ বিলিয়ন ডলার। গত রবিবার যা ছিল ২০.১৭ বিলিয়ন ডলার। এ নিয়ে ১৮ দিনে রিজার্ভে নতুন করে যোগ হলো ২.৮৭ বিলিয়ন ডলার। জানা যায়, ব্যাংক খাতে সুশাসন ফেরানোর চেষ্টা, রিজার্ভ থেকে ঢালাওভাবে ডলার বিক্রি বন্ধসহ বিভিন্ন কারণে হুন্ডি চাহিদা কমে এবং ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বাড়ছে। বিগত বছরের শেষ পাঁচ মাসে অর্থপাচার কমে যাওয়ায় চলতি বছর বাংলাদেশ প্রায় দুই হাজার ৮০০ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ২২ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশের অর্থনীতি গত পাঁচ দশকে যখনই উঠে দাঁড়াতে চেয়েছে তখনই নানাভাবে ধাক্কা খেয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বড় সংকট হিসেবে দেখা দিয়েছে ডলারের অভাব। দীর্ঘদিন ধরে চলা ডলার সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। ডলারের বিপরীতে টাকার মানে ধস এবং রিজার্ভের পতন এখন আলোচনার কেন্দ্রে। স্বাভাবিকভাবেই পতন ঠেকিয়ে রিজার্ভ বাড়িয়ে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করতে হবে। একসময় ধারাবাহিকভাবে কমেছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। আমদানি ব্যয়ে লাগাম টেনেও ঠেকানো যায়নি পতন। আমদানি কমলেও ব্যাংকে ব্যাংকে সংকট থাকায় সরকারি প্রতিষ্ঠানের জরুরি আমদানি এবং বকেয়া বিল পরিশোধে বাংলাদেশ ব্যাংককে রিজার্ভ থেকে প্রচুর ডলার বিক্রি করতে হয়েছে। প্রতি মাসেই কমেছে রিজার্ভ, যা পুরো অর্থনীতিকে নাজুক পরিস্থিতির দিকে নিয়ে গেছে। এখন আশা জাগাচ্ছে রেমিট্যান্স বা প্রবাস আয়ের প্রবাহ। সরকার পরিবর্তনের পর ক্রমান্বয়ে বেড়েছে প্রবাস আয়ের প্রবাহ। বলার অপেক্ষা রাখে না যে প্রবাস আয় বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। রেমিট্যান্সপ্রবাহ আরো বাড়াতে সরকারকে নানামুখী উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা। বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়লেও প্রবাস আয়ের একটি বড় অংশ এখনো ব্যাংকের মাধ্যমে না এসে হুন্ডি বা অন্যান্য মাধ্যমে আসছে। হুন্ডি বন্ধ করা গেলে বর্তমানে বছরে আসা রেমিট্যান্স দ্বিগুণ করা সম্ভব। প্রবাস আয় বৃদ্ধির জন্য আমাদের আরও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।