কুয়াশায় চালকদের অতিসতর্কতা অবলম্বন করতে হবে

বাংলাদেশে বিশেষ করে শীতকালে সড়ক দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ হচ্ছে ঘন কুয়াশা। কুয়াশার কারণে রাস্তায় গাড়ি চালানোর সময় অনেক ক্ষেত্রে সামনের গাড়ি দেখা বা এর দূরত্ব আঁচ করা যায় না। যার কারণে দুর্ঘটনা ঘটে। কুয়াশায় রাস্তা অতিরিক্ত পিচ্ছিল হয়ে যায়। এ সময় চার পাশের কিছুই ভালো দেখা যায় না। গাড়ির গতি একটু এদিক থেকে ওদিক হলে ঘটে যেতে পারে দুর্ঘটনা। সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিনই প্রাণ হারাতে হচ্ছে অনেক যাত্রীকে। আহত হয়ে চির পঙ্গুত্ববরণ করে নিদারুণ কষ্টের জীবন অতিবাহিত করছেন হাজার হাজার যাত্রী। অধিকাংশ ক্ষেত্রে একজন যাত্রীর প্রাণ ঝরার কারণে সুখের সংসারগুলো পথে বসে যাচ্ছে। শীতকালীন ঘন-কুয়াশার কারণে সড়ক ও নদীপথে দুর্ঘটনা আরো বেড়ে যায়। ঘন কুয়াশায় সড়কে যান চলাচল এবং নৌপথে নৌচলাচল বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। দেশে এমনিতেই সড়ক দুর্ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। নৌ দুর্ঘটনাও ঘটে কখনো কখনো। স্বাভাবিকভাবেই ঘন কুয়াশায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে গেছে। হেডলাইট জ্বালিয়ে কতটাই বা সামলানো যায়! বিশেষত দূরপাল্লার যানবাহনগুলো পড়ছে বেশি বিপদে। চালককে সার্বক্ষণিকভাবে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হচ্ছে। হেডলাইটে গাড়ি চালাতে হচ্ছে বলে গাড়ির গতিও কমে যাচ্ছে। ফলে নির্ধারিত সময়ের অনেক বিলম্বে যাত্রীরা পৌঁছাচ্ছেন গন্তব্যে। কুয়াশা প্রকৃতিরই আচরণ। একে মোকাবিলা করা যায় না। শীত মৌসুমে কুয়াশা দেখা দেবেই। সুতরাং সতর্কতা অবলম্বন করা ছাড়া দুর্ঘটনা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে না। শীতকালে ঘন কুয়াশায় নিরাপদে গাড়ি চালনার বিষয়ে চালকদের উদ্বুদ্ধ করতে তাদেরকে লিফলেট বিতরণ করা হয়। এসব লিফলেটে বিভিন্ন নিয়ম কানুন মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়। কুয়াশায় দৃষ্টিসীমার মধ্যে থামানো যায় এমন ধীর গতিতে সব সময় নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে রাস্তায় গাড়ি চালাতে হবে। ফগ লাইট এবং পার্কিং লাইট জ্বালিয়ে রাখতে হবে। লেন পরিবর্তন বা ওভারটেকিং করা যাবে না। কারণ পেছনের গাড়ি ঘন কুয়াশায় সামনের গাড়িকে নাও দেখতে পারে। হাই বিম কুয়াশাকে আরো বেশি ঘন করে বিধায় হাই বিমে গাড়ি চালানো যাবে না। সব সময় লো-বিমে গাড়ি চালাতে হবে। শীতের সময়ে কুয়াশা যখন বেশি থাকে তখন রাস্তায় যান চলাচল সাময়িক বন্ধ রাখাটা জরুরি। এ বিষয়ে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ যেমন জেলা প্রশাসন, উপজেলা কর্তৃপক্ষ, জনপ্রতিনিধি, পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যাতে সহজেই ব্যবস্থা নিতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে।