রপ্তানি আয়েপ্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে হবে

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে অর্থাৎ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক, ওষুধ, চামড়াসহ ২৭ ধরনের পণ্য বিশ্ববাজারে রপ্তানি হয়েছে। এ সময় বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হয়েছে দুই হাজার ৪৫৩ কোটি ৩৫ লাখ মার্কিন ডলারের পণ্য, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১২.৮৪ শতাংশ বেশি। গত আগস্টে গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের শিল্প খাতকে নাশকতা, শ্রমিক অসন্তোষসহ নানা প্রতিকূলতা মোকাবেলা করতে হয়েছে। তার পরও রপ্তানি আয়ে বড় ধরনের প্রবৃদ্ধিকে খুবই ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছেন শিল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। তারা মনে করেন, এক যুগেরও বেশি সময় ধরে দেশের তৈরি পোশাক শিল্প যেভাবে সক্ষমতা অর্জন করেছে, তা রীতিমতো অবিশ্বাস্য। তারই ফসল ঘরে তুলছে আজকের বাংলাদেশ। এ ছাড়া রপ্তানির বড় গন্তব্য ইউরোপ ও আমেরিকা অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সেসব দেশের ক্রয়াদেশ অনেক বেড়েছে। আর এসব কিছুর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশের রপ্তানি আয়ে। শিল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন, কাক্সিক্ষত আয়ের এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে কর্মপরিবেশের উন্নয়ন ও দেশের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখা অত্যন্ত জরুরি। দেশে পরিবহন, জ্বালানি, বিদ্যুৎসহ অবকাঠামো খাতে অনেক উন্নতি হলেও তা পর্যাপ্ত নয়। এখনো নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহের অভাবে শিল্প-কারখানার উৎপাদন যথেষ্ট পরিমাণে ব্যাহত হয়। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমাবনতিতে ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা শঙ্কিত। চাঁদাবাজি, ডাকাতি ইত্যাদি কারণে পণ্য পরিবহন নিয়ে ঝুঁকিতে থাকতে হয়। ডলার সংকটের কারণে কাঁচামাল আমদানি বাধাগ্রস্ত হয়। রপ্তানি আয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হলে এসব দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। ব্যাংকঋণের সুদের হার কমাতে হবে। আমরা আশা করি, বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধির এই ধারা আগামী দিনেও অব্যাহত থাকবে এবং উত্তরোত্তর তা আরো শক্তিশালী হবে। এই ধারা যেন অক্ষুণœ থাকে সেজন্য সরকারকেও এগিয়ে আসতে হবে।