যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করুন

বেড়েছে নারীপাচার
ভালো চাকরির প্রলোভন দিয়ে নারীদের বিদেশে পাচার করে বিভিন্ন দেশের নিষিদ্ধ পল্লীতে বিক্রি করে দেওয়া হয়। এমন কিছু চক্র আগে ধরাও পড়েছে। ভারতে উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশের কিছু মেয়েকে বিভিন্ন সময় ফেরতও পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তার পরও নারী পাচারকারী চক্রগুলো বছরের পর বছর এই ঘৃণ্য অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে। পাচারকারীরা পাচারের কাজে নিত্যনতুন কৌশল ব্যবহার করে। ভালো বেতনে চাকরির প্রলোভন দিয়ে বিদেশে পাচার সবচেয়ে পুরনো কৌশলগুলোর একটি। জানা গেছে, সংঘবদ্ধ পাচারচক্র অনেক তরুণীকে চাকরি দেওয়াসহ নানা প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে ভারতে পাচার করে আসছে। অনেক ক্ষেত্রে নারীকে ভারতে পাচার করে বিনিময়ে সেখান থেকে গরু নিয়ে আসা হয়। পাচারকারীরা মূলত তরুণীদের আর্থিক দুর্বলতার বিষয়টিকে কাজে লাগাচ্ছে। আমাদের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিকে ম্লান করে দিচ্ছে নারীপাচারের ঘটনা। অভিবাসন খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মানব পাচারকারী চক্রের বিস্তৃতির পেছনে বিচারহীনতাই দায়ী। দিনের পর দিন মামলার অগ্রগতি হয় না। দোষীদের আইনের আওতায় আনার হার একেবারেই কম। এমনকি মানবপাচারের ছয়-সাতটি মামলা থাকা সত্ত্বেও আসামির জামিন হয়ে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে অভিযুক্তরা খালাসও পেয়ে যায়। পরে তারা নতুন উদ্যমে একই অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে। যারা দেশের বাইরে থাকে, তারা স্থানীয় এজেন্টের মাধ্যমে মানব পাচার করে থাকে। মূল হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। অনেকে জামিন পেয়ে ফের এ ধরনের কাজে জড়িয়ে পড়ে। আবার অনেক সময় মামলা হলেও পর্যাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণের অভাবে অগ্রগতি হয় না। মানবাধিকারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মানবপাচার প্রতিরোধ আইনের সঠিক প্রয়োগ ও নজরদারি নেই। চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে সংঘবদ্ধ চক্র নারীদের ভারতে পাচার করে। তাদের সঙ্গে প্রশাসনের লোকজনও জড়িত থাকে। অত্যন্ত দ্রুত সময়ে বিচার শেষ করে দোষীদের সাজা নিশ্চিত করতে হবে। পাচারকারীচক্রের নেটওয়ার্ক বিভিন্ন দেশে সক্রিয়। বড় ধরনের অভিযান ছাড়া তাদের দমন করা যাবে না। দরিদ্র ও নিরীহ মেয়েদের রক্ষায় দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে আরো তৎপর হতে হবে।