সম্পাদকীয়

মানসম্পন্ন মূল্যস্ফীতি করতে জরুরি উদ্যোগী হোন

অতিরিক্ত মূল্যস্ফীতির কারণে নি¤œ আয়ের মানুষরা বেশি বিপাকে পড়ছেন। বাংলাদেশ ভূমির তুলনায় অধিক জনসংখ্যা। সে হিসেবে প্রত্যাশা অনুযায়ী নেই কর্মসংস্থান। তাই বলা যায় এদেশে অধিকাংশ মানুষই নি¤œ আয়ের। আর এই নি¤œ আয় দিয়েই অধিকাংশ মানুষদের বেঁচে থাকতে হয়। আর যখন মূল্যস্ফীতি ক্রমেই বেড়ে যায়, তখন এই মানুষগুলোর জীবন কতটা চ্যালেঞ্জের হয়ে দাঁড়ায় তা কি ভাবার বিষয় নয়? আমাদের দেশে কয়েক বছর থেকেই মূল্যস্ফীতি নি¤œ আয়ের মানুষের নাগালের বাহিরে। কিন্তু উদ্বেগের বিষয় হলো এখনো কোনো কাঙ্ক্ষিত ফলাফল মিলেনি। বরং কিছুদিন পরপরই শুনতে হচ্ছে বাড়তি মূল্যস্ফীতির কথা। যা সাধারণ মানুষদের দৈনিক বাড়তি চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে মূল্যস্ফীতির চাপে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি, বিক্রি হ্রাস, সুদের উচ্চহার, শ্রম অসন্তোষ, পরিবহণ ও কারিগরি সমস্যা, ডলার সংকটে কাঁচামালের ঘাটতি, বৈশ্বিক যুদ্ধ ও আকস্মিক বন্যার বিরূপ প্রভাব মোকাবেলা করছে ব্যবসা-উদ্যোগ। সম্প্রতি প্রকাশিত পত্রিকার খবর থেকে জানা যায়, উন্নয়ন প্রকল্পে স্থবিরতায় কাজ কমেছে সাধারণ মানুষের। জনজীবনে অস্থিরতা, আস্থাহীনতা দেখা দিয়েছে। ছোট-বড় সব বিনিয়োগ বা ব্যবসা প্রসারেও দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘসময় ধরে এই অবস্থা চলার কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে, তারা সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছে। কয়েকমাস ধরে শিল্পাঞ্চলগুলোতে ঘন ঘন বিক্ষোভ হচ্ছে। অনেক কারখানা সময়মতো বেতন দিতে পারছে না। ভোক্তা চাহিদা খুব দুর্বল অবস্থায় আছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। আগে ক্রেতারা যে পরিমাণে পণ্য কিনত, এখন তার চেয়ে কম কিনছে। মানুষ এখনো মানসিকভাবে সাম্প্রতিক অস্থিরতা থেকে পুরোপুরি বের হতে পারেনি। এ কারণে অনেকে কাজ হারিয়েছে, অনেকে হারানোর ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। অনেকের বাড়তি আয় বন্ধ। এ কারণে খরচ সাশ্রয়ে মনোযোগী হয়েছে বেশির ভাগ পরিবার। অন্যদিকে ব্যবসায়ীদের ব্যবসা করার জন্য পরিবেশ লাগবে। চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়নি। বিভিন্ন অনাকাক্সিক্ষত ঘটনায় ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা মহলে আস্থাহীনতা, শঙ্কা, ভয় আর উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ছে। থমকে আছে ব্যবসার প্রসার ও নতুন বিনিয়োগ। বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ সক্ষমতা কমে যাওয়ার ঝুঁকির পাশাপাশি ব্যবসা প্রসারেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দা দেখা দিলে বাজারে তার প্রভাব পড়বে। বিনিয়োগ কমে গেলে কর্মসংস্থান হবে না। মূল্যস্ফীতির প্রভাব পড়বে জনজীবনে। সুতরাং মূল্যস্ফীতি কমাতে ব্যবস্থা নিতে হবে জরুরি। আমরা আশা করব, অতিশীঘ্রই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এনে সরকার মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরিয়ে আনবেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button