সম্পাদকীয়

অবৈধ ট্রাক্টর চলাচলে অতিষ্ঠ জনজীবন: বন্ধে জরুরি পদক্ষেপ নিন

দেশের অধিকাংশ গ্রামীণ সড়ক এখন নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। বিশেষ করে সড়কের নির্দিষ্ট নিয়মনীতি না মানায় এমনটি হচ্ছে। আমাদের দেশে প্রায় সময় অভিযোগ উঠে সড়ক নির্মাণে নির্ধারিত অর্থে সড়ক হয় না। তার বেশির ভাগ অর্থই চলে যায় ক্ষমতাবান এবং দালাল চক্রের পকেটে। সে হিসেবে সড়ক মানানসই হয় না। এখন কথা হচ্ছে সড়কের কাজ যতটুকুই করা হচ্ছে, তা কি সঠিক ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে? সড়কের ক্ষতির দিক বিবেচনায় আমাদের দেশে ট্রাক্টর নিষিদ্ধ করেছে সরকার। কিন্তু এমন নিষিদ্ধের তোয়াক্কা না করেই সড়কে অবাধে চলছে ট্রাক্টর। ফলে সড়কের ক্ষতিসহ নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে ভুক্তভোগীদের। সম্প্রতি খবরাখবর থেকে জানা যায়, কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলার সড়কে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে প্রকাশ্যে চলছে নিষিদ্ধ ট্রাক্টর। গাড়িগুলো ধারণক্ষমতার অধিক মাটি, বালু ও ইট বহন করে প্রতিনিয়ত। খোলা গাড়ি থেকে সড়কে ইট ও মাটি পড়ে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সড়ক। কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার দুই থানায়ই রয়েছে ৫০০ অবৈধ ট্রলি-ট্রাক্টর। গাড়িগুলো অধিকাংশ সময় বডির দ্বিগুণ উচ্চতায় মাটি, ইট ও বালু বহন করে। এসব গাড়ির বেপরোয়া গতি এবং সড়কে মাটি-বালু পড়ে ঘটে দুর্ঘটনা। ঝরছে অনেক তাজা প্রাণ। অনেকে সারা জীবনের মতো বরণ করছেন পঙ্গুত্ব। নিষিদ্ধ এই ট্রাক্টরে নষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ সড়কগুলো। এলাকাবাসীর অভিযোগ, নিষিদ্ধ ট্রাক্টর বেপরোয়া গতিতে সড়কে চলছে দিন-রাত। অদক্ষ ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক চালকের কারণে বাড়ছে দুর্ঘটনা। ছেলেমেয়েকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন অভিভাবকরা।এ ছাড়া খোলা অবস্থায় নেওয়া বালু উড়ে মানুষের চোখে পড়ে। কেউ প্রতিবাদ করলে চালক ও মালিকদের রোষানলে পড়তে হয়। মূলত এই ট্রাক্টরের কাজ জমি চাষ করা। অথচ বাস্তবতায় দেখা যাচ্ছে সেগুলোতে আলাদা বডি লাগিয়ে মালামাল পরিবহণ করা হচ্ছে। এতে সড়কের ক্ষতিসহ প্রায় দুর্ঘটনা ঘটছে। শুধু কুমিল্লায় নয়, সারা দেশে এমন হাজারো চক্র রয়েছে। এদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা না নিয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে। কেবল গ্রামীণ সড়ক নষ্ট হচ্ছে না, সাথে অকাল মৃত্যুর কোলে পড়তে হচ্ছে। পাশাপাশি উড়ন্ত বালুতে বিরক্তির সাথে পথ পাড়ি হতে হচ্ছে জনগণকে। বিশেষ করে এটি শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে মারাত্মক প্রভাব বিস্তার করছে। সরকার পতনকে কেন্দ্র করে বর্তমান প্রেক্ষাপটকে কাজে লাগিয়ে অনেকে মাথাছাড়া দিয়ে উঠছে এদের বিরুদ্ধে এখন উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে পরবর্তীতে এরা দেশের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে। তাই এখনি অভিযানের মাধ্যমে এদের আইনের আওতায় আনতে হবে। বিনিময়ে সড়কে সুশৃঙ্খল পরিবেশ গড়তে হবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button