রাজধানীতে যত্রতত্র আবর্জনার স্তূপ মোটেই কাম্য নহে

রাজধানীজুড়ে ময়লা আবর্জনা। যত্রতত্র ময়লায় ভাগাড়। জনসচেতনতার অভাব আর দায়িত্ববানদের অবহেলা ও কর্তৃপক্ষের চরম অব্যবস্থাপনায় গোটা রাজধানীই যেন ময়লা-আবর্জনার বৃহৎ ভাগাড়। রাস্তাঘাট, অলিগলি, আবাসিক, বাণিজ্যিক এলাকা সর্বত্রই ময়লা-আবর্জনার ছড়াছড়ি। ড্রেন-নর্দমার নোংরা তরল ময়লা-পানি ঢ়ুকে পড়ছে বাড়িঘরেও। চারদিকের উৎকট গন্ধে বাতাস ভারি হয়ে থাকছে। প্রতিটি বাড়ির ফাঁকে, খোলা জায়গায়, গলিপথে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। যে কারণে নগরবাসীকে নাকে মুখে রুমাল চেপে চলাফেরা করতে হয়। নানা ধরনের ময়লা-আবর্জনার উৎকট গন্ধ নাগরিক জীবনকে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেললেও এর বিন্দুমাত্রও কোন পদক্ষেপ নেই। যত্রতত্র রেখে দেওয়া ডাস্টবিনের কারণে রাস্তার বেশির ভাগ স্থান সংকুচিত হয়ে এসেছে। যতটুকু বাকি থাকে, তা দিয়ে স্বাভাবিকভাবে যানবাহন চলাচল করতে পারে না। এতে এসব স্থানে যানজট লেগেই থাকে। এই কনটেইনারগুলোর কারণে দুর্ভোগে পড়েন পথচারীরা। প্রতিদিনই বাড়ছে রাজধানীতে খোলা স্থানে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। যে যার মতো সড়ক বা বাসাবাড়ির সামনে ময়লা ফেলে রাখছে। সড়কে খোলা ডাস্টবিন না থাকায় এটি চরম আকার ধারণ করেছে। প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানকে বাসাবাড়ির ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহের দায়িত্ব দিয়ে দায় সারছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। বাসাবাড়ি থেকে এসব প্রতিষ্ঠান উচ্চমূল্যে ময়লা সংগ্রহ করলেও নেই কোনো জবাবদিহিতা। সিটি করপোরেশনের নজরদারি ও খোলা ডাস্টবিন না থাকায় রেস্টুরেন্ট, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, বাসাবাড়ির পরিত্যক্ত ময়লা-আবর্জনা বা উচ্ছিষ্ট কখনো সড়কে কখনো বা ফুটপাতে ফেলা হচ্ছে । এতে নষ্ট হচ্ছে শহরের সৌন্দর্য ও পরিবেশ। এর আগে ২০১৬ সালে প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কে ময়লা-আবর্জনা ব্যবস্থাপনায় দুই সিটিতে ১১ হাজার ডাস্টবিন স্থাপন করা হয়, যেগুলোর কোনো অস্তিত্বই নেই এখন। সংশ্লিষ্টদের দাবি, সিটি করপোরেশনের সঠিক তদারকি ও মানুষের অসচেতনতা এবং সর্বোপরি চুরির কারণে টেকসই হয়নি প্রকল্পটি। বাসাবাড়ি, হোটেলের পচা-বাসি খাবার, ফল-মূলসহ দোকানপাটের বিভিন্ন পরিত্যক্ত ময়লা-আবর্জনা ছাড়াও হাসপাতাল-ক্লিনিক, ঔষধ মার্কেটের মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ, পরিত্যক্ত সিরিঞ্জ, পরিত্যক্ত গজ, ব্যান্ডেজ, অপারেশনের বিভিন্ন পরিত্যক্ত যন্ত্রাংশ, মানব দেহের ফেলে দেওয়া অংশবিশেষসহ প্রতিদিনই সড়কের পাশে খোলা আকাশের নিচে ফেলা হচ্ছে অবাধে। এতে পরিবেশ নষ্টসহ বায়ুদূষণ যেমন হচ্ছে, তেমনি রোগজীবাণু ছড়াচ্ছে। এ অবস্থায় ব্যস্ততম স্থানগুলোতে ময়লা-আবর্জনা ফেলা বন্ধ করতে জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে, পাশাপাশি পর্যাপ্ত ডাস্টবিন নির্মাণ করে জনদুর্ভোগ থেকে নগরবাসীদের রক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত কাজ করতে হবে।