সম্পাদকীয়

রাতে সড়ক-মহাসড়কে ডাকাত আতঙ্ক দূর হোক

সারা দেশে বেড়েছে সংঘবদ্ধ ডাকাতি, চুরি, ছিনতাইসহ সম্পত্তি সংক্রান্ত অপরাধের ঘটনা। ছিনতাই, ডাকাতি ও হত্যাকা- জনমনে অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন থানা ও ফাঁড়ি থেকে লুণ্ঠিত অস্ত্র কাক্সিক্ষত মাত্রায় উদ্ধার না হওয়ায় জনমনে স্বস্তি ফেরানো কঠিন হয়ে পড়েছে। স্থানীয় সড়ক বা মহাসড়ক কোনোটিই এখন আর রাতে নিরাপদ নয়। যে কোনো জায়গায় হঠাৎ করেই হাজির হচ্ছে ডাকাত দল। সরকারের তরফ থেকে নানা ঘোষণা থাকলেও এগুলো খুব একটা কাজে আসছে না। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছে প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা। সম্প্রতি সাঁথিয়ায় মধ্যরাতে সড়কে গাছ ফেলে বাস-ট্রাকসহ অন্তত ১৫টি গাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। গত শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে পাবনা-সাঁথিয়া আঞ্চলিক সড়কের ছেচানিয়া ব্রিজের পাশে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও স্থানীয়দের থেকে জানা যায়, রাত দেড়টার দিকে ছেচানিয়া ব্রিজের পাশে সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে প্রথমে একটি পণ্যবাহী ট্রাক আটকে রাখে ডাকাত দলের সদস্যরা। এতে কিছু সময়ের মধ্যেই বাস, ট্রাক, প্রাইভেট কার ও হায়েস মাইক্রোবাসসহ প্রায় ৪০টি গাড়ি আটকে পড়ে। এসময় ২০ থেকে ৩০ জন হাঁসুয়া, রামদা, ছুরি, চাকুসহ বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে পর্যায়ক্রমে গাড়িগুলোতে ডাকাতি চালায়। গাড়ির গেট খুলতে দেরি করায় কিছু গাড়ি ভাঙচুর করে তারা। এসময় পরিবহণ শ্রমিক ও যাত্রীদের মারধর করে তাদের সঙ্গে থাকা মোবাইল, টাকা ও অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী লুট করে নিয়ে যায়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এ তা-ব চলে বলে জানা যায়। ডাকাতদের লক্ষ্যে পরিণত হচ্ছেন প্রবাসীরা। ঢাকার বিমানবন্দর থেকে বাড়ি ফেরার পথে মহাসড়কের দাউদকান্দি সদর, গৌরীপুর, বুড়িচংয়ের নিমসার, কালা কচুয়া, সৈয়দপুর, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ ও চৌদ্দগ্রামের কয়েকটি এলাকায় ডাকাতিগুলো ঘটছে। শুধু এই মহাসড়ক নয় বিভিন্ন মহাসড়কেই এখন ডাকাতির ঘটনা অহরহ ঘটছে। জনমনে স্বস্তি ফেরানো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। জনমনে স্বস্তি ফেরাতে পুলিশকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। পেশাজীবীসহ অংশীজনকে সম্পৃক্ত করে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে, যেন পুলিশের প্রতি মানুষের আস্থা বাড়ে এবং জনমনে স্বস্তি ফেরে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button