সম্পাদকীয়

অচলাবস্থা কাটাতে ব্যবস্থা নিন

আবাসন খাতে সংকট

দেশের আবাসন খাতে সংকট দেখা দিয়েছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর সহায়তার অভাব, প্রবাসীদের বিনিয়োগ কমে যাওয়ায় আবাসন খাতে দেখা দিয়েছে শ্লথগতি। অন্যদিকে রয়েছে সেবা সহায়তা ও সুষ্ঠু নীতির অভাব। জানা যায়, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে দেশে সবচেয়ে এগিয়ে থাকা আবাসন খাত এখন ক্রান্তিকাল পার করছে। অর্থনীতির অন্যতম প্রধান এই খাতটিতে অচলাবস্থা চলছে। প্লট, ফ্ল্যাট ও বাড়ি বিক্রিতে মন্দার কারণে এই খাতজুড়ে চরম স্থবিরতা। নতুন বিনিয়োগ না হওয়া ও পুরনো প্রজেক্ট প্রায় অচল হয়ে থাকায় উদ্যোক্তারাও পরিচালন ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন। অনেক কোম্পানি পরিচালন খরচ মেটাতে লাভ না করেই প্লট-ফ্ল্যাট ছেড়ে দিচ্ছে। উদ্যোক্তারা বলছেন, অন্তত ৬০ শতাংশ ব্যবসা মন্দার কবলে। এর ধাক্কা এসে লেগেছে আবাসন খাতের সঙ্গে জড়িত রড, সিমেন্টসহ অন্তত আড়াইশ উপখাতেও। দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের অন্যতম চালিকাশক্তি আবাসন খাতের সঙ্গে ছোট-বড় অনেকগুলো শিল্প ও উপখাত জড়িত। এসব খাতেও অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হওয়ায় দেশের অর্থনীতিতেও গতির সঞ্চার হয়েছিল। আবাসান খাতের দুরবস্থার সঙ্গে সঙ্গে এ খাতের কর্মীদের জীবনযাপনও হুমকিতে পড়েছে। দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখা খাতগুলো একটি অপরটির সঙ্গে জড়িত। একটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে অন্যটিতেও তার প্রভাব পড়ে। অথচ উৎপাদন, বিপণন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রেখে চলা অনেক প্রতিষ্ঠানেরই আজ মুমূর্ষু অবস্থা হয়েছে। অনেক সম্ভাবনা নিয়ে বিনিয়োগ করে জাতীয় অর্থনীতিতে ২১ শতাংশ অবদান রাখার পরও শিল্প হিসেবে বিকশিত হতে পারেনি আবাসনশিল্প। বিকাশের পথ রুদ্ধ করে রেখেছে নানা প্রতিবন্ধকতা। দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি এই আবাসনশিল্প কর্মসংস্থানেও বড় ভূমিকা রাখছিল। কিন্তু খাতটির দুরবস্থার সঙ্গে সঙ্গে শিল্পে কর্মরত জনবলের ওপরও আঘাত আসছে। নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার স্বার্থে এখন কর্মী ছাঁটাই শুরু হয়েছে অনেক শিল্প-কারখানায়। দেশের অর্থনীতিতে এর বিরূপ প্রভাব এরই মধ্যে পড়তে শুরু করেছে। বেসরকারি বিনিয়োগের পথ কণ্টকমুক্ত না হলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি সম্ভব হবে না। নতুন বিনিয়োগও আসবে না। দেশের অর্থনীতির স্বার্থে আবাসন খাতের বাধাগুলো দূর করা দরকার। এতে দেশের অন্যান্য শিল্প বিকশিত হওয়ার সুযোগ পাবে। তাই, আবাসন খাতের স্থবিরতা দূর করতে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button