সম্পাদকীয়

বিনোদনের নামে ‘খেলার মাঠ’ দখল করে ব্যবসা বন্ধ হোক

সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটির আওতাধীন এলাকার সবচেয়ে বড় খেলার মাঠ ধূপখোলায় অবস্থিত। ৭ দশমিক ৪৭ একর আয়তনের এই মাঠের নাম দেওয়া হয়েছিল ধূপখোলা আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলার মাঠ। ২৫ কোটিরও বেশি টাকা ব্যয়ে এই মাঠের সংস্কার শেষে ২০২৩ সালের ১১ অক্টোবর উদ্বোধন করা হয়েছিল। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এই প্রথম খেলার মাঠে বাণিজ্যিকভাবে মেলার আয়োজন করা হয়েছে। এই মাঠের দক্ষিণপূর্ব কোণে ‘ইস্ট এন্ড ক্লাব’ুএর কার্যালয় রয়েছে। মাঠের একটি অংশে ক্লাবের পক্ষ থেকে মেলার আয়োজন করার পোস্টার টাঙাতে দেখা গেছে। পুরান ঢাকার নারিন্দাতে বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকা মাঠেও মেলা বসানো হয়েছে। পুরো মাঠে শিশু-কিশোরদের জন্য বিভিন্ন রাইড ও খেলনার দোকান বসানো হয়েছে। পাশাপাশি সেখানে খাবারের দোকানও বসানো হয়েছে। ইংলিশ রোডে ময়লার ভাগাড়কে দৃষ্টিনন্দন করে পার্কে পরিণত করেছিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। সেই মালিটোলা পার্কেও মেলা বসিয়েছেন স্থানীয় বিএনপির নেতারা। পুরান ঢাকার ধোলাইখালের প্রধান সড়কের এক পাশের একটি অংশের দখল করে ঈদের দিন থেকে মেলা বসিয়েছেন স্থানীয় যুবদল নেতা সৌরভ রাসেল। রাস্তা বন্ধ করে মেলা বসানোর কারণে গাড়ি চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। ঈদ ও বৈশাখি মেলা আয়োজনের নাম করে পুরান ঢাকার লক্ষèীবাজার এলাকায় খেলার মাঠ ও মার্কেটের জায়গা দখলে নিয়ে ব্যবসা করার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের বেশকিছু নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। সিটি করপোরেশনের নাম ভাঙিয়ে কোনও অনুমতি ছাড়াই মাঠ দখল করে ব্যবসা করছেন তারা। ফলে খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত ওই এলাকার শিশুরা। এমনিতেই ঢাকা সিটিতে পর্যাপ্ত মাঠ নেই। যে কয়টি মাঠ আছে তা জনসংখ্যার তুলনায় অপ্রতুল। খেলার মাঠ না থাকলে শুধু মোবাইল আর টিভি দেখতে অভ্যস্ত হয়ে পড়বে শিশুরা। যা তাদের শারীরিক ও মানুষিক বিকাশে বাধার সৃষ্টি করবে। এটা মোটেই ভাল বিষয় নয়। পত্র-পত্রিকায় কিছুদিন পরপর মাঠ দখলের সংবাদ দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু এরপরও খেলার মাঠ ও পার্ক রক্ষা না করে করপোরেশন নিশ্চুপ হয়ে বসে আছে। সিটি করপোরেশনের উচিত দ্রুত এসব মাঠ ও পার্ক উদ্ধার করে শিশু-কিশোর ও বাসিন্দাদের ব্যবহারের সুযোগ করে দেওয়া। যাঁরা মাঠ ও পার্ক দখলের সঙ্গে যুক্ত তাঁদের রাজনৈতিক পরিচয়ের দিকে না তাকিয়ে দখলদার হিসেবে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। আমরা বিশ^াস করি সিটি করপোরেশনের দায়িত্বশীল যারা আছেন, তারা শিগগিরই এর একটা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। খেলার মাঠ বা রাস্তা বন্ধ করে বিনোদনের নামে এসব ব্যবসা বন্ধ করতে হবে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button