পলাতক আসামীরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় উদ্বেগ বাড়ছে

গত বছর জুলাই-আগস্ট মাসে দেশের ১৭টি কারাগারে বাইরে থেকে হামলা হয়। একই সময়ে কারাগারের ভেতরেও বন্দিদের বিদ্রোহের নজিরবিহীন ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় অনেক দুর্র্ধষ জঙ্গি, মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামিসহ অনেক বন্দি পালিয়ে যান। গণঅভ্যুত্থানের আগে ও পরে অন্তত দুই হাজার ২৪১ জন বন্দি কারাগার থেকে পালিয়েছেন। এই সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের একটি বড় অংশ এখনো পলাতক আছেন। সেসময় অনেক আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ লুট হয়। শুধু জেলখানা নয়, সে সময় থানা, পুলিশ ফাঁড়ি থেকেও অনেক আগ্নেয়াস্ত্র লুট হয়েছে। লুট হওয়া অনেক আগ্নেয়াস্ত্র এখনো উদ্ধার করা যায়নি। ধারণা করা হয়, তার একটি বড় অংশই অপরাধীদের হাতে রয়েছে। আর বর্তমানে দেশে সক্রিয় অপরাধীদের সঙ্গে জেল পলাতক অপরাধীরাও রয়েছে। হাসিনা সরকারের পতনের পর বন্দিদের বিক্ষোভ এবং বাইরে থেকে তাদের সহযোগী ও স্বজনদের হামলার ফলশ্রুতিতে কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগার এবং সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া ও শেরপুর কারাগার থেকে এক হাজার ৪১৫ জন বন্দি পালিয়ে যান। কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া ২০৩ বন্দির মধ্যে অন্তত ২০০ জনের সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি বলে জানা গেছে। সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া ও শেরপুর কারাগার থেকে পালিয়ে আসা আসামিদের মধ্যে ৬৮৯ জন আত্মসমর্পণ করেছেন অথবা গ্রেপ্তার হয়েছেন। বাকি ৫২৩ জন কোথায় আছেন তা জানে না কর্তৃপক্ষ। প্রতিনিয়ত আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। প্রতিদিনই ঘটছে বহু খুনের ঘটনা। সেই সঙ্গে বেড়েছে ছিনতাই, চুরি-ডাকাতি, এমনকি ঘটছে অনেক নৃশংস ঘটনা। বেড়েছে হুমকি-ধমকি ও চাঁদাবাজির ঘটনা। পথেঘাটে মানুষ যেমন নিরাপত্তাহীন, তেমনি নিরাপত্তাহীন নিজের বাসার ভেতরেও। এখন পর্যন্ত ছোটখাটো অপরাধে অভিযুক্ত আসামিরাই শুধু আত্মসমর্পণ করেছেন। বেশিরভাগ বড় অপরাধে দ-িত, মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামিরা এখনো পলাতক।’ যারা আত্মসমর্পণ করেছে তাদের সেই সক্ষমতা কিংবা শক্তি নেই বলেই তারা তা করেছে। পলাতক বন্দিদের সহজ মনে করার কোনো কারণ নেই। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত বা বড় আসামিরা তাদের সেই ধরনের নেটওয়ার্ক আছে বলেই তারা এখন পর্যন্ত আত্মগোপনে আছে। ‘এই আসামিরা আবার সংগঠিত হতে পারে বা বিভিন্ন অপরাধ চক্রের সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপনের চেষ্টা করতে পারে। এটা সার্বিকভাবে সমাজের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। কাজেই আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর উচিত হবে যত দ্রুত সম্ভব এদের গ্রেফতার করা। একই সঙ্গে তাদের অতীত রেকর্ড পর্যালোচনা করে সেই নেটওয়ার্ককে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণে রাখা। এখনই যদি আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করা না যায়, সামনে তা আরো ভয়ংকর রূপ নিতে পারে। তাই সারা দেশে পুলিশি কর্মকা- আরো জোরদার করতে হবে। গোয়েন্দা নেটওয়ার্ককে আরো কার্যকর করতে হবে।