সম্পাদকীয়

আইন-শৃঙ্খলার অবনতি: নিরাপত্তাহীনতার নতুন প্রবণতা

দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়ঙ্কর রূপ নিচ্ছে। খুন, মাদক-সহিংসতা, চাঁদাবাজি ও মব ভায়োলেন্স জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। শুধু রাত নয়, দিনের আলোতেও চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই সাধারণ ঘটনা। পারিবারিক সহিংসতা, ধর্ষণ ও হত্যা, অপহরণ ও জিম্মি করে অর্থ আদায়-সবই বাড়ছে। রাজনৈতিক ও সামাজিক সংঘাতের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার। এর ফলে দেশের মানুষ চরম উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহের ঘটনা দেশের পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরে। প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, লক্ষ্মীপুরে জমি বিরোধের জেরে একজন জামায়াত নেতার মৃত্যু, ভোলা ও বরগুনায় পারিবারিক হত্যাকা-, কুমিল্লায় মা ও মেয়ের হত্যা-এসব ঘটনাই দেশে সহিংসতার বিস্তারকে প্রমাণ করছে। রাজধানীর কাকরাইলে, রাজবাড়ী ও রাজশাহীতে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা বেড়েছে। অস্থির পরিস্থিতি সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তাহীনতায় রাখছে এবং আর্থিক, সামাজিক ও ধর্মীয় জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। নিরাপত্তাহীনতার প্রভাব শুধু জীবনহানি নয়; দেশের অর্থনৈতিক কর্মকা-ও থমকে যায়। আসন্ন দুর্গাপূজার মতো বড় ধর্মীয় উৎসবের সময় বিশেষভাবে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় প্রশাসনকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে এবং সম্ভাব্য ষড়যন্ত্র রোধ করতে। এ সময় দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোর সক্রিয়তা, তৎপরতা এবং জনসচেতনতা সবচেয়ে জরুরি। শুধু নজরদারিই নয়, দ-নীয় অপরাধের জন্য দৃঢ় ও সময়োপযোগী ব্যবস্থা গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। মানুষ যেন অস্থিতিশীলতায় জীবনযাপন করতে না হয়, সেজন্য সরকারের সর্বোচ্চ মনোযোগ প্রয়োজন। আইন শৃঙ্খলা না থাকলে কোনো উন্নয়ন সম্ভব নয়; তাই সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেওয়া অপরিহার্য।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন
Close
Back to top button