হোটেলের খাবারে স্বাস্থ্যঝুঁকি: সচেতন হতে হবে

সারা বাংলাদেশের অধিকাংশ হোটেল রেস্তোরাঁয় যে ভেজাল খাবার মানুষকে খাওয়াচ্ছে তার কি হবে? এ বিষয়টি আগে সামনে আসা উচিত। আমরা যে খাবার খাচ্ছি তাতো বিষে ভরা। দেশি-আন্তর্জাতিক সব গবেষণায় দেশে খাবারের বিষক্রিয়ার বিষয়টি বারবার ওঠে আসছে। ফুটপাত থেকে শুরু করে অভিজাত হোটেল-রেস্টুরেন্ট কোথাও এখন ভেজালমুক্ত নয়। এ দেশে ভেজাল প্রতিরোধে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভিন্ন সরকারি সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের বড় অভাব রয়েছে। আমাদের দেশে পর্যাপ্ত আইনি ও কারিগরি নিরাপত্তাব্যবস্থা না থাকায় প্রায় সব ধরনের খাদ্যদ্রব্যেই অবাধে ভেজাল চলে। এমন অবাদ ভেজালের ফলে মানুষও অসুস্থ হচ্ছে দিন দিন। মানুষ মারাও যাচ্ছে। প্রশ্ন হলো, দেশ নাকি উন্নয়নের শিখরে যাচ্ছে। আমাদের জীবনযাত্রার মান বেড়েছে, রাস্তাঘাটের উন্নতি হয়েছে- না বলার সুযোগ নেই। দেশের মানুষ যদি সুস্থই না থাকে, জীবনই যদি না বাঁচে তবে কাদের জন্য এ উন্নয়ন। ভেজাল খাদ্যে উন্নয়ন হয়েছে। এটা ভয়ংকর! দেশের সার্বিক উন্নয়নের সঙ্গে ভেজাল খাদ্য রোধে উন্নয়ন চাই। নামিদামি রেস্তোরা ও হোটেলগুলোতে প্রতিদিন খাবার খাচ্ছেন লাখো মানুষ। কিন্তু কি খাচ্ছেন তারা? এসব হোটেল থেকে শুরু করে বড় বড় হোটেলগুলোতে পর্যন্ত অবাধে বিক্রি হচ্ছে পঁচা-বাসি খাবার। যা খেয়ে পেটের পীড়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এজন্য বিভিন্ন সময় এসব হোটেল-রেস্তোরাঁকে জেল-জরিমানা করা হলেও অনিয়ম বন্ধ হচ্ছে না। আমরা কি নিরাপদ খাদ্য পাচ্ছি? সামনে পাওয়ার সম্ভাবনাও কম। ভেজাল পণ্য ও অসাধু ব্যবসায়ীদের ঠেকাতে ব্যাপক অভিযান প্রয়োজন। অস্বীকার করা যাবে না যে, খাদ্যে ভেজাল বা দূষণ একটি বৈশ্বিক সংকট। এ সংকট তৈরি হয়েছে ভেজালবিরোধী অধিকাংশ আইন বর্তমানে অনেকটা অকার্যকর থাকায়। আইনের প্রয়োগ খুব কম। ভেজালবিরোধী অভিযান পরিচালিত হয়, তা বিচ্ছিন্নভাবে। ভেজাল খাদ্য রোধে বাজারে সার্বিক তদারকি ব্যবস্থা খুবই করুণ। ভেজাল রোধে সবাইকে সচেতন হতে হবে। ভেজালবিরোধী আইন বাস্তবায়ন করতে হবে। ভেজালকারারীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। মাঠ পর্যায়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের এব্যাপারে ধারণা দিতে হবে, সচেতন করতে পারবে। তারা তাদের পরিবারকে সবচেয়ে বেশি কাউন্সিলিং করতে পারবে। সর্ব্বোপরি রাষ্ট্র এব্যাপারে জিরো টলারেন্স না দেখালে আমাদের সর্বনাশ হয়ে যাবে।
