বিনোদন

ঈদুল আযহায় মুক্তি মিছিলে এক ডজন সিনেমা

প্রবাহ বিনোদন: রোজার ঈদের ছবিগুলো সবে দ্বিতীয় সপ্তাহে চলছে। এরইমধ্যে কোরবানির ঈদের ছবির লাইনআপ প্রায় চূড়ান্ত। রোজার ঈদে বক্স অফিসের ভরাডুবি থেকে শিক্ষা নেননি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এরইমধ্যে লড়াইয়ে নেমেছে প্রায় এক ডজন ছবি। ১৪টি মুক্তি পাওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত রোজার ঈদে মুক্তি পেয়েছে ১১টি ছবি। প্রথম সপ্তাহে শাকিব খান অভিনীত ‘রাজকুমার’ই দখলে নিয়েছিল ১২৬ হল, শরিফুল রাজ অভিনীত ‘ওমর’ পেয়েছিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১টি হল। বাকিগুলো মুক্তি পেয়েছিল নামমাত্র হলে। বক্স অফিসে ‘রাজকুমার’ কিছুটা ভালো করলেও বাকি ছবিগুলো এরইমধ্যে প্রতিযোগিতায় নেমেছে। ১০ ছবির হয়েছে ভরাডুবি। কারণ হিসেবে নির্মাতা, হল মালিক থেকে শুরু করে প্রযোজক-পরিবেশকরাও বলেছেন, একসঙ্গে এত ছবি মুক্তিই কাল হয়েছে। তবে এতেও শিক্ষা হয়নি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের। কোরবানির ঈদে মুক্তির জন্য এরইমধ্যে লাইনে দাঁড়িয়েছে ১০টি ছবি-রায়হান রাফীর ‘তুফান’, সানী সানোয়ারের ‘এশা মার্ডার-কর্মফল’, এমডি ইকবালের ‘রিভেঞ্জ’, এম রাহিমের ‘জংলি’, বদিউল আলম খোকনের ‘আগুন’, রাখাল সবুজের ‘পুলসিরাত’, হাসিবুর রেজা কল্লোলের ‘কবি’, আরাফাত হোসেনের ‘রঙ্গনা’, আলোক হাসানের ‘লীলা’ এবং মিঠু খানের ‘নীলচক্র’। এই ছবিগুলোর বাইরেও আছে আরো বেশ কয়েকটি ছবি, যেগুলো কোরবানির ঈদে মুক্তির জন্য হঠাৎ করেই লাইনে দাঁড়িয়ে যাবে। এরইমধ্যে প্রযোজক সমিতিতে ‘এশা মার্ডার-কর্মফল’, ‘রিভেঞ্জ’ ও ‘কবি’ মুক্তির জন্য আবেদনও করেছেন নির্মাতারা। ‘কবি’ পরিচালক হাসিবুর রেজা কল্লোল বলেন, ‘আগেই ঘোষণা দিয়েছি আমার ছবিটি কোরবানির ঈদে মুক্তি দেব। গান ও গল্প আমার ছবির প্রধান আকর্ষণ। আর কোন ছবি এলো বা গেল সেটা নিয়ে ভাবছি না। তবে একটা কথা না বললেই নয়, ঈদে আসলে তিন-চারটির বেশি ছবি মুক্তি দেওয়া উচিত নয়। সারা বছর সমবণ্টনে ছবিগুলো মুক্তি পেলেই ভালো। এমনিতে হলের সংখ্যা কম। সেখানে ঈদে ১০ থেকে ১২টি ছবি মুক্তি পেলে সবারই ক্ষতি।’ ‘এশা মার্ডার-কর্মফল’ পরিচালক সানী সানোয়ার বলেন, ‘আমি বিষয়টি নিয়ে খুবই বিরক্ত। একটা ঈদে এত ছবি কেন মুক্তি পাবে! সবাইকে তো ক্ষতিটা বুঝতে হবে। রোজার ঈদেই তো একটা শিক্ষা হলো সবার। আমি উদ্যোগ নিয়েছি, কিছুদিনের মধ্যে প্রযোজক-পরিচালকদের নিয়ে বসব। একটা সুরাহা করতে হবে। আমি তো রোজার ঈদের আগেই টিজার মুক্তি দিয়েছি, জানিয়েছি কোরবানির ঈদে মুক্তি দেব। অন্যরা আগে থেকে কিছু না বলে হঠাৎ ঈদে হাজির হবে কেন? এটা সত্যি, ঈদে মার্কেট ওপেন থাকে। তাই বলে নিজেদের ভালো-মন্দ বুঝবে না কেউ! এভাবে চললে তো ইন্ডাস্ট্রি শেষ হয়ে যাবে।’ সানী সানোয়ারের সঙ্গে একমত পরিবেশক সমিতির সাবেক সভাপতি মিয়া আলাউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘রোজার ঈদেও আমি সতর্ক করেছিলাম অনেককে ফোন করে। এবারও বলছি, আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নেবেন না। সারা বছর পড়ে আছে, তাহলে কেন দুই ঈদে পাড়াপাড়ি করবেন? সিনেমা তো শিল্প। এখানে পাড়াপাড়ি করে কোনো লাভ হবে না। বরং নিজের ক্ষতিই হবে। চলচ্চিত্রের সঙ্গে আমার পাঁচ দশকের সম্পর্ক। যখন সোনালি যুগ ছিল তখনো কিন্তু পাঁচ-সাতটির বেশি ছবি মুক্তি পায়নি। তখন তো হল ছিল এক হাজার ২০০টির বেশি। আর এখন সব মিলিয়ে দেড় শ হল হবে কি না সন্দেহ। কোরবানির ঈদের পরেও ভালো সময় আছে। অক্টোবর-নভেম্বরেও সিনেমা ভালো চলে। তখন মুক্তি দিলে ক্ষতি কী!’ ঈদে এবারও শাকিব খান অভিনীত ছবির পাশাপাশি মুক্তি পাবে শরিফুল রাজ, সিয়াম আহমেদ, আদর আজাদ, আরিফিন শুভ, শবনম বুবলী ও জিয়াউল রোশানের ছবি। শাকিব খানের ‘তুফান’ ছবির বাজেট ধরা হয়েছে চার কোটি টাকার বেশি। ছবিটির শুটিং চলছে ভারতের বিভিন্ন লোকেশনে। অন্যদিকে সিয়াম আহমেদের ‘জংলি’র শুটিংও মাত্র তিন দিন আগে শুরু হয়েছে। ছবিগুলো ঈদের আগেই কি শেষ হবে! ‘জংলি’র পরিচালক রাহিম বলেন, ‘আমরা সব কিছু পরিকল্পনামতো করছি। ঈদের আগেই শুটিং-ডাবিং শেষ করে ফেলব। ঈদে আসছি, এটা চূড়ান্ত। খুব শিগগির প্রচার-প্রচারণাও শুরু করব আমরা।’ ‘তুফান’ ছবিটি যৌথভাবে প্রযোজনা করছে চরকি, আলফা আই এবং ভারতের এসভিএফ। পরিচালক রায়হান রাফী বলেন, ‘আমরা শুরু থেকেই বলে এসেছি, কোরবানির ঈদে ছবি মুক্তি দেব। এমন না যে হঠাৎ করেই ঘোষণা দিলাম। আমার ছবির দম আছে। আর কে কে ঈদে এলো, সেটা নিয়ে ভাবছি না। আমারটা ভালো হলে অবশ্যই ভালো ব্যবসা করবে। অন্যদেরটা ভালো হলে সেটাও দেখবে দর্শক। আমি ১০ থেকে ১২টি সংখ্যা নিয়ে চিন্তা করছি না। এখন শুটিং নিয়েই আছি। ঈদের আগেই সব কাজ শেষ করতে চাই।’

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন
Close
Back to top button