তারকাদের ছবিতে রহস্যময় সংখ্যা, প্রকাশ পেল আসল বার্তা

প্রবাহ বিনোদন: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কয়েক দিন ধরে দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে জনপ্রিয় নারী তারকাদের ছবিতে ভেসে ওঠা রহস্যময় সংখ্যা। কেউ পোস্ট করছেন ‘৯’, কেউ ‘২৪’, আবার কারও ছবিতে জ্বলজ্বল করছে ‘১০০০’। কৌতূহলী নেটিজেনরা ভেবে হিমশিম খাচ্ছিলেন, ঠিক কী বোঝাতে চাইছেন তারা। অবশেষে জানা গেছে এই সংখ্যার আসল অর্থ, যা সামাজিক সচেতনতার সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। মূলত ডিজিটাল সহিংসতা ও সাইবার বুলিংয়ের বিরুদ্ধে একজোট হয়েছেন তারকারা। তাদের নতুন এই প্রতিবাদী উদ্যোগের নাম ‘মাই নাম্বার, মাই রুলস’। ছবির ওপর যে সংখ্যা লেখা হচ্ছে, তা দেখায় প্রতিদিন গড়ে কতবার তারা অনলাইনে হয়রানি বা কটূক্তির শিকার হন। নীরবতার পরিবর্তে এই সংখ্যা দিয়ে তারা নিজেদের অভিজ্ঞতা প্রকাশ করছেন, আর সবার নজরে আনছেন ডিজিটাল সহিংসতার বাস্তবতা। মঙ্গলবার ২৫ নভেম্বর আন্দোলনের শুরু করেন অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা। নিজের ছবিতে ‘৯’ লিখে তিনি জানান, দিনে অন্তত ৯ বার অনলাইনে অপমান ও হয়রানির সম্মুখীন হতে হয় তাকে। নিজের অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করে তিশা লেখেন, “সংখ্যা থেকে কণ্ঠস্বর, আসুন আমাদের গল্প সবার সামনে তুলে ধরি। তোমার নম্বরের গল্প বলো, আরও জোরে আওয়াজ তোলো। মানুষ হয়তো কেবল একটি সংখ্যা দেখতে পারছেন, কিন্তু আমি যা সহ্য করেছি এবং যা কাটিয়ে উঠেছি, তার সবই দেখতে পাচ্ছি।” তিশার পর আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন রুনা খান, শবনম ফারিয়া, প্রার্থনা ফারদিন দিঘী, মৌসুমী হামিদ, সাজিয়া সুলতানা পুতুল ও আশনা হাবিব ভাবনা। রুনা খান তার ছবিতে লিখেছেন ‘২৪’। অর্থাৎ দিনে ২৪ বার তিনি সাইবার বুলিংয়ের শিকার হন। শবনম ফারিয়ার ক্ষেত্রে সংখ্যা আরও ভয়াবহ, তার ছবিতে লেখা ছিল ‘১০০০’। কেউ কেউ লিখেছেন ‘৩’, ‘৭২’, আবার ভাবনা লিখেছেন ‘৯৯ প্লাস’, যা নিয়মিত অনলাইন সহিংসতার এক অস্বস্তিকর বাস্তব তুলে ধরে। ডিজিটাল নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে রুনা খান গণমাধ্যমকে বলেন, “শুধু তারকা নয়, যেকোনো নারীই সামাজিকমাধ্যমে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। গত দশ বছর ধরে সোশ্যাল মিডিয়া যত দ্রুত মানুষের হাতে পৌঁছেছে, তার সঠিক ব্যবহার অনেকেই শেখেনি।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, “নারীরা কখনোই শতভাগ নিরাপদ ছিলেন না। তবে ৫ আগস্টের পর পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীরা প্রতিনিয়ত হয়রানি, অপমান ও কটূক্তির মুখোমুখি হচ্ছেন।” আয়োজকদের সূত্র জানায়, অনলাইনে ডিজিটাল সহিংসতার বিরুদ্ধে সচেতনতা জাগাতে ‘মাই নাম্বার, মাই রুলস’ ক্যাম্পেইন চলবে টানা ষোলো দিন। এই উদ্যোগের লক্ষ্য, ভুক্তভোগীদের অভিজ্ঞতা সামনে এনে সমাজকে এই সমস্যার গুরুত্ব বোঝানো।



