পশ্চিমা সহায়তা নিয়ে উদ্বিগ্ন জেলেনস্কি, উদ্যোগী বাইডেন

প্রবাহ ডেস্ক : অভ্যন্তরীণ সংকটের কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন অন্য কোনো দেশের জন্য সহজে আর্থিক সহায়তা দিতে পারছে না। মার্কিন কংগ্রেসে বিরোধী রিপাবলিকান দল প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের যাবতীয় উদ্যোগ বানচাল করার চেষ্টা করছে। ইউক্রেন ও ইসরায়েলের জন্য বিপুল আর্থিক সহায়তার প্যাকেজও তাই থমকে গেছে। ইউরোপের প্রধান অর্থনৈতিক শক্তি জার্মানির বাজেট সংকটের ফলেও ব্যয় সংকোচের নানা উদ্যোগ চলছে। ফলে ইউক্রেনের জন্য ইউরোপের সহায়তার ভবিষ্যৎও অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। এ দুই প্রধান শক্তির সক্রিয় সহযোগিতা ছাড়া ইউক্রেনের পক্ষে রাশিয়ার লাগাতার হামলার মুখে প্রতিরোধ বজায় রাখা আদৌ সম্ভব কি না, সে বিষয়ে সংশয় বাড়ছে। শেষ পর্যন্ত দুই শক্তি সহায়তা মঞ্জুর করলেও বিলম্বের কারণে ইউক্রেন বিপদে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমনই এক প্রেক্ষাপটে জি৭ শিল্পোন্নত গোষ্ঠীর শীর্ষ বৈঠকে পশ্চিমা বিশ্বের ঐক্যের গুরুত্ব তুলে ধরলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেন, রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে চাপ বাড়িয়ে চলেছে এবং আগামী বছর পশ্চিমা বিশ্বের ঐক্য ভাঙার আশায় অপেক্ষা করছে। জেলেনস্কির মতে, পশ্চিমা বিশ্বকে প্রেরণার লড়াইয়ে জিততেই হবে। তিনি মনে করিয়ে দেন, চলমান সংঘাত শুধু ইউক্রেন নয়, ইউরোপের পরিণতিও নির্ধারণ করবে। জি৭ শীর্ষ নেতারা অবশ্য এক বিবৃতিতে ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন। রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়াতে সে দেশ থেকে হীরা ও পেট্রোলিয়াম রপ্তানি সীমিত করার উদ্যোগ নিতে চান তারা। জেলেনস্কি ইউরোপীয় নেতাদের উদ্দেশে ইউক্রেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য করার লক্ষ্যে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করার প্রতিশ্রুতি পালনের আবেদন জানান। আগামী সপ্তাহে ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। ইইউ কমিশন নভেম্বর মাসে সেই উদ্যোগের পক্ষে সমর্থন জানালেও ২৭টি সদস্য দেশকে সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। মূলত হাঙ্গেরির আপত্তির কারণে ইউক্রেন সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বিরোধী রিপাবলিকান দলের উদ্দেশে ইউক্রেনের প্রতি সহায়তার পথে বাধা দূর করার আরজি জানিয়েছেন। তিনি তাদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সংগ্রামে রাশিয়ার জয় হলে মস্কো ন্যাটোর সদস্যদের ওপরেও হামলা চালানোর সাহস পাবে। সে ক্ষেত্রে মার্কিন সেনারাও যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে। বাইডেন বলেন, পুতিন এখানেই থামবেন না। তখন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সেনাদের মধ্যে সরাসরি সংঘাত ঘটবে। ফলে পুতিনকে জিততে দেওয়া যায় না বলে মত দেন বাইডেন। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বাইডেন প্রশাসনের অবস্থান তুলে ধরেন। তার মতে, রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য ইউক্রেনের ওপর চাপ সৃষ্টি না করার নীতিতে বাইডেন অটল রয়েছেন। ইউক্রেন সে বিষয়ে নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেবে। সে দেশকে সামরিক ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে যেতে মার্কিন প্রশাসন বদ্ধপরিকর। তার মতে, ইউক্রেনের পাশ থেকে সরে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ঐতিহাসিক ভুল হবে।