আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্র হুতিদের বিরুদ্ধে সংঘাত চায় না কেন?

প্রবাহ ডেস্ক : গাজায় ইসরাইলের হামলা অব্যাহত রাখায় লোহিত সাগরের বাব আল মানদিব প্রণালীতে পশ্চিমা জাহাজ চলাচলে বাদ সেধেছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা। ফিলিস্তিনিদের ওপর নৃশংস ধ্বংসযজ্ঞ চালালেও ইসরাইল যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা পাচ্ছে। কিন্তু লোহিত সাগরের এই গুরুত্বপূর্ণ রুটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মার্কিন প্রেসডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের উদ্যোগ যেন যথেষ্ট নয়। অথচ এখানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পাশাপাশি ইসরাইলেরও স্বার্থ আছে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নৌপথের নিরাপত্তা নির্বিঘœ রাখা যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৈশ্বিক স্বার্থ। মধ্য নভেম্বর থেকে মধ্য ডিসেম্বর পর্যন্ত হুতিরা অন্তত ৩০টি আন্তর্জাতিক জাহাজের ওপর আক্রমণ করেছে। এই রুটে চলাচলকারী প্রধান শিপিং কোম্পানি তাদের রুট পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে। আফ্রিকার কেপ অব গুড হোপের পাশ দিয়ে তাদের পূর্বদিকে আসতে হচ্ছে। ঠিক যেন সুযেজ খাল পূর্ববর্তী যুগে ফিরে গেছে জাহাজ কোম্পানিগুলো। এর ফলে জ¦ালানি বেশি লাগছে, সময় বেশি লাগছে তাছাড়া আনুষঙ্গিক অন্যান্য খরচও বেশি হচ্ছে। হুতিরা যে লোহিত সাগরকে নো গো জোন বানিয়ে ফেলছে যুক্তরাষ্ট্রের কি কিছু করণীয় নেই। বিশ্লেষকদের মতে, ওয়াশিংটন চায়না গাজা যুদ্ধ আঞ্চলিক যুদ্ধের রূপ নিক। এই ক্ষেত্রে হুতিদের বিরুদ্ধে সরাসরি সামরিক হস্তক্ষেপের অর্থ ইসরাইলের পক্ষ নিয়ে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া। তাই ওয়াশিংটন এটি এড়াতে চাইছে। তাছাড়া বাইডেন ট্রাম্প নন। ট্রাম্প সৌদি আরব ও আরব আমিরাতের যেমন ঘনিষ্ঠ ছিলেন বাইডেনের পররাষ্ট্রনীতি ঠিক সেরকম নয়। রোনাল্ড রিগ্যান যুক্তরাষ্ট্রের থাকাকালে একবার পারস্য উপসাগরে ইরানের বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপ করেছিলেন। তবে এখন পরিস্থিতি সে রকম নয়। ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধের পর মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ভাবমূর্তি রিগ্যান জমানার মতো নেই। এই ফিলিস্তিনের প্রতি সারা বিশ্বে এবং বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে যে পর্যায়ে আছে তাতে হুতিদের বিরুদ্ধে সরাসরি পদক্ষেপ গ্রহণ দূরদর্শিতার পরিচায়ক নয়। ইয়েমেনে গৃহযুদ্ধের একপর্যায়ে সৌদি আরব সমর্থিত সরকার সেখানে গঠিত হয়। এই সরকারের বিরুদ্ধে ইরানের সমর্থন হুতি শিয়ারা ২০১৪ সাল থেকে তাদের লড়াই শুরু করে। এর পরের বছর সৌদি আরব হুতিদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করে। বর্তমানে হুতি ও সৌদিদের মধ্যে অস্ত্রবিরতি চলছে। মার্কিন হস্তক্ষেপ হলে যুদ্ধ নতুন করে শুরু হতে পারে। এর সঙ্গে গাজার বর্তমান অবস্থা পুরো অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button