ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় রাশিয়ার প্রধান তেল-গ্যাস স্থাপনায় আগুন

প্রবাহ ডেস্ক : দক্ষিণ রাশিয়ার জ্বালানি স্থাপনাগুলোর ওপর ডজনখানেক ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। গতকাল সোমবার চালানো হামলায় রাশিয়ার একটি প্রধান তেল শোধনাগার ও গ্যাস প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রে আগুন ধরে যায়। এছাড়া ভোলগা থেকে ককেশাস পর্বতমালা পর্যন্ত ফ্লাইট চলাচল ব্যাহত হয় বলে জানিয়েছেন রাশিয়া ও ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিট রুশ ভূখ-ে মোট ৭০টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত করেছে। এর মধ্যে ২৫টি ভোলগোগ্রাদ, ২৭টি রোস্তভ ও ৭টি আস্ত্রাখান অঞ্চলে ধ্বংস করা হয়েছে। ড্রোনের ধ্বংসাবশেষের কারণে একটি তেল শোধনাগারে আগুন লাগে বলে জানান ভোলগোগ্রাদ গভর্নর আন্দ্রেই বোচারভ। তবে তিনি নির্দিষ্ট করে বলেননি কোন শোধনাগারটি আগুনে পুড়েছে। রাশিয়ার নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর ঘনিষ্ঠ টেলিগ্রাম চ্যানেল বাজা জানিয়েছে, রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান লুকওয়েলের একটি শোধনাগারের কাছে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। প্রতিদিন তিন লাখ ব্যারেল ধারণক্ষমতার শোধনাগারটি দক্ষিণ রাশিয়ার সবচেয়ে বড় শোধনাগার। প্রতিবেশী আস্ত্রাখান অঞ্চলের গভর্নর ইগর বাবুশকিন জানান, ইউক্রেনীয় ড্রোনগুলো জ্বালানি ও শক্তি স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। তবে কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ইউক্রেনের জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা কাউন্সিলের অধীনে থাকা সেন্টার ফর কাউন্টারিং ডিজইনফরমেশনের প্রধান লেফটেন্যান্ট আন্দ্রেই কোভালেঙ্কো বলেন, আস্ত্রাখান গ্যাস প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রটিতে আঘাত হানা হয়েছে। গ্যাস জায়ান্ট গাজপ্রমের নিয়ন্ত্রণাধীন এই প্ল্যান্ট দৈনিক প্রায় ৮ হাজার ৩৪০ মেট্রিক টন গ্যাস প্রক্রিয়াকরণে সক্ষম। রয়টার্স স্বাধীনভাবে যুদ্ধক্ষেত্রের কোনও প্রতিবেদন যাচাই করতে পারেনি। গাজপ্রম ও লুকওয়েল তাদের স্থাপনাগুলো হামলার শিকার হয়েছে কিনা সে বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। রাশিয়ার বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রক সংস্থা রোসাভিয়াটসিয়া নিরাপত্তার স্বার্থে আস্ত্রাখান, ভোলগোগ্রাদ, কাজান, নিজনেকামস্ক, সারাতোভ এবং উলিয়ানভস্ক বিমানবন্দর থেকে সাময়িকভাবে ফ্লাইট স্থগিত করেছে। ২০২২ সালে রাশিয়া হাজার হাজার সেনা পাঠিয়ে ইউক্রেনে আক্রমণ করার পর, ইউক্রেন তাদের বড় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা চালানোর চেষ্টা করছে। ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা চালাচ্ছে এবং এমনকি মস্কোতে একজন শীর্ষ সামরিক কমান্ডারকেও হত্যা করেছে। রাশিয়া বলছে, এসব হামলা সন্ত্রাসবাদ, যুদ্ধের উত্তেজনা বৃদ্ধি এবং পশ্চিমাদের সহায়তায় পরিচালিত হচ্ছে, যারা ইউক্রেনকে অস্ত্র ও লক্ষ্যস্থল চিহ্নিত করার তথ্য দিয়ে সহায়তা করছে। ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলছেন, তাদের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। কারণ রাশিয়ার জ্বালানি, পরিবহণ ও সামরিক অবকাঠামো মস্কোর যুদ্ধ প্রচেষ্টার মূল চাবিকাঠি।