মিয়ানমারে ধর্মীয় আশ্রমে বিমান হামলায় নিহত ২২

প্রবাহ ডেস্ক : মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলীয় সাগাইং এলাকার একটি বৌদ্ধ ধর্মীয় আশ্রমে সরকারি বাহিনীর বিমান হামলায় শিশুসহ ২০ জনের বেশি লোক নিহত হয়েছে। দেশটির জান্তাবিরোধী এক যোদ্ধা ও একজন অধিবাসী বার্তা সংস্থা এএফপিকে এ তথ্য দিয়েছে। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ২০২১ সালে গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাতের পর থেকে দেশটিতে যে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়, তাতে সবচেয়ে বিপর্যস্ত হয়েছে মধ্যাঞ্চলের সাগাইং এলাকা। বিদ্রোহী সশস্ত্র সংগঠনগুলোর সদস্যদের লক্ষ্য করে এখানকার গ্রামগুলোতে জান্তা বাহিনী ক্রমাগত বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। আর শুক্রবার রাত ১টার দিকে লিন তা লু গ্রামে এ হামলার সর্বশেষ ঘটনাটি ঘটে। নিরাপত্তার জন্য নিজের নাম প্রকাশ না করার শর্তে জান্তাবিরোধী একজন যোদ্ধা জানান, বিমান হামলায় গ্রামটির বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের একটি আশ্রমে আশ্রয় নেওয়া বাড়িঘর হারানো মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। তিনি আরও জানান, তিন শিশুসহ মোট ২২ জন এই হামলায় মারা গেছে এবং মারাত্মক আহত অবস্থায় হাসপাতালে রয়েছে আরও দুজন। এ বিষয়ে ওই জান্তাবিরোধী যোদ্ধা বলেন, ‘তারা মনে করেছিল, বৌদ্ধ আশ্রমে হয়তো তারা নিরাপদে থাকতে পারবে, কিন্তু তারাও বোমাবর্ষণের শিকার হলো।’ তবে এ বিষয়ে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের মুখপাত্র জাউ মিন তুন কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। এদিকে, গ্রামটির একজন অধিবাসী এএফপিকে নিশ্চিত করেছেন, বোমা হামলায় আশ্রমটি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। তিনি জানান, শুক্রবার ভোর রাতে মৃতদেহগুলো একটি ট্রাকে বোঝাই করে কাছের একটি সমাধিস্থলে নেওয়া হয়েছে। নাম না প্রকাশ করার শর্তে ওই গ্রামবাসী বলেন, ‘মৃতদেহগুলোর বেশিরভাগেরই মাথায় আঘাত দেখা গিয়েছিল এবং অনেকের দেহ ছিন্নভিন্ন অবস্থায় ছিল। এসব দেখা খুবই কষ্টের।’ এ বছরের মার্চ মাসে মিয়ানমারজুড়ে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার যে প্রলয়াঙ্করী ভূমিকম্প হয়, তাতে সাগাইং অঞ্চল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এলাকাটিতে ভূমিকম্পে তিন হাজার ৮০০ লোক নিহত হয় এবং ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। ভূমিকম্পের পর জান্তা সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যে অস্ত্রবিরতির কথা শোনা গিয়েছিল। তবে সংঘর্ষ থেমে যায়নি এবং বিমান হামলাও বন্ধ হয়নি। এর আগে গত মে মাসে সাগাইং এলাকার একটি গ্রামের এক স্কুলে বিমান হামলায় ২০ শিক্ষার্থী ও দুই শিক্ষক নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছিল।