আন্তর্জাতিক পরিম-লে ফিলিস্তিনি বন্দিদের অবস্থা অবমূল্যায়ন করা হয়েছে

প্রবাহ ডেস্ক : যুদ্ধের সময় গাজা এবং পশ্চিম তীর থেকে হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে আটক করেছে ইসরায়েল। কিন্তু মুক্তির সময় তারা যে অবস্থায় ফিরেছে, সেদিকে আন্তর্জাতিকভাবে খুব কম মনোযোগ দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে, হাতে গোনা কয়েকজন ইসরায়েলি বন্দিকে নিয়ে অনেকটা হৈ চৈ পড়ে গেছে, বিশেষ করে পশ্চিমা মিডিয়াগুলোতে। গতকাল শনিবার লন্ডন-ভিত্তিক কাউন্সিল ফর আরব-ব্রিটিশ আন্ডারস্ট্যান্ডিং (ঈঅঅইট) এর পরিচালক ক্রিস ডয়েল আল জাজিরাকে এমনটাই বলেছেন। ডয়েল বলেন, আন্তর্জাতিক পরিম-লে ইসরায়েলি বন্দিদের ওপর এত বেশি মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে, যা বোধগম্য; কিন্তু এই ফিলিস্তিনি বন্দী ও আটক ব্যক্তিদের, মুক্তি দেওয়ার সময় তাদের অবস্থা সম্পর্কে কোনো খবরই পাওয়া যায় না। তিনি বলেন, তাদের কোথায় রাখা হয়েছিল? নির্যাতন, এমনকি যৌন নির্যাতনের অভিযোগ… এই সবকিছুই খুব বেশি অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে। ক্রিস ডয়েলের মতে, অবশ্যই ফিলিস্তিনিদের জন্য এটি অত্যন্ত বাস্তব, খুবই বেদনাদায়ক। এটি দেখায় যে, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও অন্যান্য দেশে কভারেজ এবং রাজনৈতিক বিতর্ক এতটাই এগিয়ে গেছে যে, সর্বদা ইসরায়েলিদের সঙ্গে কী ঘটে তার ওপর ফোকাস থাকে। ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে কী ঘটে, তার ওপর ফোকাস কম। ডয়েল আরও বলেন, ট্রাম্পের ২০-দফা যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনায় ইসরায়েলকে জবাবদিহিতার পরিকল্পনা বাদ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সবকিছুর জন্য কে দায়ী, তা নির্ধারণ করার জন্য একটি ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন। ২০-দফা পরিকল্পনা চুক্তিতে তা সম্পূর্ণ অনুপস্থিত, ইচ্ছাকৃতভাবে এটি রাখা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েল কোনো বিচারিক ব্যবস্থা অনুমোদন করতে চাইবে না, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
ইসরায়েলি গণহত্যা
টানা দুই বছরের গণহত্যা যুদ্ধের অবসানে সম্প্রতি মার্কিন-সমর্থিত চুক্তির পর হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। অঞ্চলজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৬৭ হাজারেরও বেশি। একই সময়ে ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি বেশি মানুষ আহত হয়েছে। অনেকেই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। চলতি বছরের শুরুতেও একটি যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে ইসরায়েল গত ২৭ মে থেকে গাজায় পৃথক সাহায্য বিতরণ উদ্যোগ শুরু করে। এতে সমর্থন দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এই পদক্ষেপের পর অঞ্চলটিতে দুর্ভিক্ষ প্রকট হয়ে ওঠে। ইসরায়েলি বাহিনী খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রের কাছে জড়ো হওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপরও গুলি চালিয়ে যায়। এর ফলে শত শত মানুষ নিহত হয়। সেই সঙ্গে দুর্ভিক্ষে শিশুসহ বহু মানুষের মৃত্যু হয়। গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য নেতানিয়াহু ও তার প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। উপত্যকাজুড়ে যুদ্ধের জন্য ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখি।