আন্তর্জাতিক

তুর্কমেনিস্তানে বিরল সম্মেলনে রাশিয়া-তুরস্ক-ইরানের প্রেসিডেন্ট

প্রবাহ ডেস্ক : বিশ্বের অন্যতম বিচ্ছিন্ন মধ্য এশিয়ার দেশ তুর্কমেনিস্তান এক বিরল আন্তর্জাতিক শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করেছে। এই সম্মেলনে অংশ নিতে এসেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান ও ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানসহ অনেক আঞ্চলিক নেতারা। গতকাল শুক্রবার তুর্কমেনিস্তানের ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। খবর এএফপির। সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের এই দেশটির পররাষ্ট্র নীতির প্রধান ভিত্তি হলো ‘স্থায়ী নিরপেক্ষতা’ নীতি, যা ১৯৯৫ সালে জাতিসংঘ কর্তৃক সমর্থিত হয়েছিল। এই নীতির কারণেই তুর্কমেনিস্তান প্রায় উত্তর কোরিয়ার মতো বিশ্বের সবচেয়ে গোপনীয় ও বিচ্ছিন্ন দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই নীতির কারণে তারা কোনো ইউনিয়ন বা সামরিক জোটে পূর্ণ সদস্যপদ নিতে পারে না। তুর্কমেনিস্তানের নেতৃত্বে রয়েছে বেরদিমুহামেদভ পরিবার। ২০০৬ সালে গুরবাঙ্গুলি বেরদিমুহামেদভ ক্ষমতায় আসেন। এরপর ২০২২ সালে তার ছেলে সারদার বেরদিমুহামেদভকে দায়িত্ব দেন। গুরবাঙ্গুলি এখনও ‘আর্কাদাগ’ বা নায়ক-রক্ষক হিসেবে নিজের ক্ষমতা ধরে রেখেছেন। প্রচুর প্রাকৃতিক গ্যাস মজুদের জন্য পরিচিত এই দেশটির চীন, রাশিয়া, ইরান ও তুরস্কের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। যদিও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর জন্য দেশটি কার্যত বন্ধ। প্রেসিডেন্ট সারদার বেরদিমুহামেদভ সম্প্রতি নিরপেক্ষতার গুণগান করে একটি নতুন বইও প্রকাশ করেছেন।
প্রচুর গ্যাস, সামান্য পানি
ধারণা করা হয়, তুর্কমেনিস্তানের কাছে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ রয়েছে। অন্যদিকে, দেশটিতে পানি সরবরাহ অত্যন্ত সীমিত। বিজ্ঞানীরা সতর্ক করছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। দেশটির তিন-চতুর্থাংশ বিশাল কারাকুম মরুভূমি দ্বারা আবৃত। তুর্কমেন অর্থনীতির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প হল তুলা চাষ। কিন্তু এতে অত্যধিক পানি ব্যবহারের কারণেও আঞ্চলিক পানি ঘাটতি সৃষ্টি হচ্ছে।
মিথেন ‘নরকের প্রবেশদ্বার’
দেশের প্রধান পর্যটন আকর্ষণ হলো একটি বিশাল প্রাকৃতিক গ্যাস কুপ। সেখানে গত পাঁচ দশক ধরে আগুন জ্বলছে। ১৯৭১ সালে সোভিয়েত বিজ্ঞানীরা ভুলবশত কুপটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। তুর্কমেন কর্তৃপক্ষ বারবার ‘নরকের প্রবেশদ্বার’ নামে পরিচিত গ্যাস কুপের আগুন বন্ধ করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও সফল হয়নি। ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির মতে, তুর্কমেনিস্তান বিশ্বের সর্বোচ্চ মিথেন নিঃসরণকারী দেশ।
পবিত্র প্রাণী
দেশটিতে স্থানীয় ঘোড়া ও কুকুরের জাতকে পবিত্র বলে গণ্য করা হয়। প্রাণীগুলোকে জাতীয় প্রতীকের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। গুরবাঙ্গুলির নির্দেশে আলাবাই—বা সেন্ট্রাল এশিয়ান শেফার্ড ডগ—এবং আখাল-টেক ঘোড়ার সম্মানে অসংখ্য মূর্তি তৈরি করা হয়েছে। বাবা ও ছেলে নিয়মিত অন্যান্য বিশ্বনেতাদের কাছেও কুকুর ও ঘোড়া উপহার পাঠান ও নেন। জনসমক্ষে তাদের প্রায়শই প্রাণীদের আদর করতে দেখা যায়।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button