স্থানীয় সংবাদ

ডাবল লাইনের দাবিদার ঢাকা-ভাঙ্গা-যশোর ও খুলনা মোংলা রেলপথ!

স্টাফ রিপোর্টার ঃ গত ১০ অক্টোবর উদ্ভোধন হয়েছে যশোর-ভাঙ্গা-ঢাকা রেলপথ। স্বপ্নের পদ্মাসেতুর পর দক্ষিণাঞ্চলবাসীর আরেকটি স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে। পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে রেল লাইন নির্মাণসহ এই প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা। তবে , গনযোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবসহ কয়েকটি অনলাইন মাধ্যমে রেলের একমুখী লাইন নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন । রেল লাইনের সিঙ্গেল লাইন গুলোতে ১ ফুট করে দুই পাশে বাড়িয়ে দুইটি লাইন করলে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো উন্নত হত বলে অনেকেই মতামত পোষন করছেন। আগামী ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভার্চুয়ালি এই রেলপথের উদ্বোধন করবেন বলে জানায় রেল কর্তৃপক্ষ। খুলনা-মোংলা বন্দর রেলপথটি মংলা বন্দরের সাথে সারাদেশের রেলপথে যোগাযোগ স্থাপনের নিমিত্তে নির্মিত হচ্ছে। এটি ৬৫ কিলোমিটার লম্বা ব্রডগেজ রেলপথ হবে। রূপসা রেল সেতু এই পথেরই অংশ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই রেলপথের মাধ্যমে মোংলা বন্দরের পণ্য একদিকে যেমন দেশের মধ্যে কম খরচে পরিবহন করা যাবে; অন্যদিকে ভারত, নেপাল ও ভুটান এই পথ ব্যবহার করে পণ্য আমদানি-রপ্তানি করবে। ফলে দক্ষিণের অর্থনীতির অগ্রগতিতে রেলপথটি বড় ভূমিকা রাখবে। এ প্রকল্পে খরচ হয়েছে ৪ হাজার ২৬০ টাকা। নির্মাণাধীন এ রেলপথটি দুটি লাইন করবার দাবি জানিয়েছেন অনেকে। বিষয়টি নিয়ে ভার্চুয়ালে অনেককেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করতে দেখা যাচ্ছে।ডিজিটাল বাংলাদেশের আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সময়ের অন্যতম দাবি যেন “ডাবল লাইন”। উল্লেখ্য যশোর-ঢাকা রেলপথটি পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের মাধ্যমে রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতায়। যেটি বাংলাদেশের দক্ষিণ এবং দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলকে আনা হয়। ট্রেন লাইনটি ঢাকার কমলাপুর থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার । পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ব্রডগেজ রেল লাইন নির্মাণে মোট ব্যায় হয়েছে ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা। এই প্রকল্পে বাংলাদেশ সরকার অর্থায়ন করছে ১৮ হাজার ২১০ কোটি টাকা, বাকি ২১ হাজার ৩৬ কোটি টাকা অর্থায়ন করছে চীন। রেলপথটি ঢাকার কমলাপুর থেকে শুরু হয়ে নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, নড়াইলের ওপর দিয়ে গিয়ে শেষ হবে যশোরে। রেলপথটির প্রথম অংশে কমলাপুর থেকে গেন্ডারিয়া পর্যন্ত হচ্ছে ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন। দ্বিতীয় অংশ গেন্ডারিয়া থেকে মাওয়া ৩৬ কিলোমিটার সিঙ্গেল ব্রডগেজ লাইন । তৃতীয় অংশ মাওয়া থেকে ভাঙ্গা জংশন পর্যন্ত ৪২ কিলোমিটার। চতুর্থ অংশ ভাঙ্গা থেকে রূপদিয়া পর্যন্ত রেলপথ হচ্ছে ৮৬ কিলোমিটার। এটিও হচ্ছে ব্রডগেজ সিঙ্গেল লাইন। ১৭২ কিলোমিটার রেলপথে মোট স্টেশন হচ্ছে ১৯ টি। যার মধ্যে ১৪টি নতুন নির্মাণ হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে-কেরানীগঞ্জ, নিমতলা, শ্রীনগর, মাওয়া, জাজিরা, শিবচর, ভাঙ্গা, নাগরকান্দা, মুকসুদপুর, মহেশপুর, লোহাগড়া, নড়াইল, পদ্মবিলা এবং জামদিয়া। বাকি ছয়টি স্টেশন পুনঃবিন্যাস করা হচ্ছে। এই রেল পথের মধ্যে প্রায় ২২ কিলোমিটার নির্মাণ হচ্ছে ভায়াডাক্ট রেলপথ। ৩০টি লেভেল ক্রসিং এবং ৪০টি আন্ডারপাস নির্মাণ হবে। বর্তমানে ইউরোপ আমেরিকাসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর আদলে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বর্তমান সরকার। তথ্য, প্রযুক্তি ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় কয়েকগুন এগিয়েছে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে ডিজিটাল বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পেরেছে এদেশের নাগরিকেরা। তবে মেট্রোর্েেলর এ যুগে ঢাকা – ভাঙ্গা রেলপথে সিঙ্গেল ওয়ে করা হয়েছে। এ বিষয় নিয়ে নেটদুনিয়ায় অনেকেই মন্তব্য করছেন বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ। সুশান্ত সিনহা বলেন, সিঙ্গেল লাইন হওয়ায় একটি ট্রেন অতিক্রম করার সময় আরেকটি ট্রেনকে কোনো না কোনো ষ্টেশনে অপেক্ষা করতে হবে। একসাথে ২টি লাইন হলে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরেকটু উন্নতি হত। ট্রেন অন্য ষ্টেশনে দাড়িয়ে থাকতে হতো না। আশিকুর রহমান বলেন, প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত এই রেলপথটিতে কিছু অর্থায়ন করে ২টি পথ করা হলে জীবনযাত্রার মান আরেকটু উন্নয়ন হতে পারতো। পলাশ খান বলেন, মোংলা হলো বন্দর এলাকা। খুলনা – মোংলা রেলপথটি যদি ডাবল লাইনে হয়, তাহলে বানিজ্যিকভাবে সফলতা পাবে পার্শ্ববর্তী জেলাসমূহ।
এ বিষয়ে রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় ব্যবস্থাপক শাহ সুফী নুর মোহাম্মদ বলেন, রেলের পথ যত বেশী হবে, যোগাযোগ ব্যবস্থা তত উন্নত হবে। তবে, যারা টেকনিক্যাল বিষয় দেখে তারা বলতে পারবে ।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button