স্থানীয় সংবাদ

ছাদ ফাটা প্লাস্টার খসে পড়লেও চলে চিকিৎসা সেবা

খুলনা বক্ষব্যাধি হাসপাতালের বেহাল অবস্থা

শেখ ফেরদৌস রহমান : উপরের ছাদ ফাটা নিচে রোগী ছাদের প্লাস্টার খসে পড়ছে। এভাবে চলছে খুলনা ভৈরব নদীর তীরে অবস্থিত খানজাহান আলী থানার মিরেরডাঙ্গা খুলনা বিভাগীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতালের চিত্র। যেখানে ২১ জেলার মানুষের জন্য এক মাত্র সরকারী ভাবে যক্ষা, টিবি রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হয়। তবে হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীরা যেমন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে ঠিক তেমনি চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয়সহ অন্যান্যরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। হাসপাতালটির ৭ টি আবাসিক ভবন দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। আর এসব পরিত্যক্ত ভবণে চলে মাদকসেবীদের আড্ডা। পরিত্যক্ত ভবণে মাদক সেবনের সরাঞ্জামাদিসহ চলে বিভিন্ন অপকর্ম। সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের জরাজীর্ণ দ্বিতল ভবনের সবগুলো ওয়ার্ড এবং রুমের ছাদের প্লাস্টার খসে পড়তে করেছে। ভবনের ছাদ স্যাঁতসেঁতে চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে। ইতোমধ্যে খুলনা স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (এইচইডি) থেকে ভবনটি চরম ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষনা করা হয়েছে। এছাড়া রোগীদের জন্য টয়লেটগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। টয়েলেটের পাশে পানির ট্যাপগুলো অধিকাংশ অকার্যকর। যে কারণে আন্তঃ বিভাগের ভর্তি রোগীদের নিদারুন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। পাশাপাশি হাসপাতালটিতে ব্লাড, এক্সরে, ইসিজি ছাড়া অন্য কোনো রোগের পরীক্ষার যন্ত্রপাতি নেই। বাকি পরীক্ষাগুলো রোগীদের বাইরে থেকে করাতে হয়। যা গরিব রোগীদের জন্য খুবই কষ্টসাধ্য। এসব কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে রোগীদের চিকিৎসা সেবা নিতে অনীহা বাড়ছে। ফলে ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যাও কমছে। হাসপাতালটিতে আন্তঃ বিভাগে চিকিসাধীন রোগীর স্বজন মালেহা বেগম বলেন, দিনের বেলায় সূর্যের আলো পড়লেও যেন কেমন একটি স্যাঁতসেঁতে অবস্থা থাকে। দেখেন হাসপাতালটির উপরে ছাদ ফেটে প্লাস্টার খসে রড দেখা যাচ্ছে। আর ধুলোবালির কথা কি বলব? দেশ আধুনিক হচ্ছে উন্নয়ন হচ্ছে তবে এই পুরাতন হাসপাতালটির কেন এমন বেহাল অবস্থা। আমি একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষর নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি দ্রুত ব্যবস্থা নিতে। এ বিষযে খুলনা বক্ষব্যাধি হাসপাতালের চিকিৎসা তত্ববাধায়ক ডাঃ প্রদীপ চন্দ্র মন্ডল বলেন, আমরা হাসপাতালটি সংস্কার বা নতুন ভবণের জন্য একাধিকবার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষদের চিঠি দিয়েছি। তবে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। শুনেছি গণপূর্ত অধিদপ্তর থেকে এখানে নতুন ভবণ নির্মাণ হবে। তবে কবে নাগাদ হবে আমি সঠিক সময় বলতে পারছিনা। এ বিষযে খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ মনজুরুল মুরশিদ বলেন, আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছি। ইতোমধ্যে নতুন ভবণের চাহিদার জন্য সব ধরনের অফিসিয়াল কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। এখন গণপূর্ত থেকে দ্রুত ব্যবস্থা নিলে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। আশা করি কিছুদিনের মধ্যে কাজ শুরু হবে। উল্লেখ্য পাকিস্তান সরকারের সময়ে ১৯৬৫ সালে ৭ একর জায়গার উপর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট খুলনা বক্ষ ব্যাধি হাসপাতালটি নির্মিত হয়। নামমাত্র কয়েকদফা সংস্কার করা হলেও বড় ধরণের কার্যকরী কোনো সংস্কার করা হয়নি। ৫৮ বছর বয়সী হাসপাতালের ভবনটি বর্তমানে জরাজীর্ণ এবং খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রূপ নিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button