মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হলেন বিদায়ী ওসি কামাল হোসেন ঃ নবাগত ওসি মম্তাজুল হককে বরণ
বিদায় মুহুর্তেও তিনি কর্মের মধ্য দিয়ে প্রমাণ করলেন তিনি মানবিক পুলিশ

খানজাহান আলী থানা/ফুলবাড়ীগেট/আটরা গিলাতলা প্রতিনিধি ঃ সর্বস্তরের মানুসের ভালোবাসায় সিক্ত হলেন খানজাহান আলী থানার বিদায়ী অফিসার্স ইনচার্জ মানবিক পুলিশ অফিসার মোঃ কামাল হোসেন খান। একই সাথে ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করা হলো থানার নবাগত অফিসার্স ইনচার্জ মোঃ মম্তাজুল হককে। খানজাহান আলী থানার অফিসার্স ইনচার্জ মোঃ কামাল হোসেন খানের খুলনা সদর থানায় বদলিজনিত কারনে বিদায় সংবর্ধনা প্রদান করেন তার সহকর্মী, থানা এলাকার বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক সংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেনী পোশার মানুষ। সকলের অশ্রু সিক্ত ভালোবাসায় বিদায়ী অফিসার্স ইনচার্জ মোঃ কামাল হোসেন খানকে বিদায় জানানো হয়। বিদায়ের শেষ ব্যস্ততার মুহুর্তেও তিনি কর্মের মধ্যে দিয়ে আবারও পরিচয় দিলেন তিনি মানবিক পুলিশ । খানজাহান আলী থানার অফিসার্স মোঃ কামাল হোসেন খানের শেখ কর্মদিসব ছিল গতকাল মঙ্গলবার। শেষ কর্মদিবসের সকাল থেকে অনানুষ্ঠানিকভাবে ক্রেস্ট, ফুল, জায়নামাজ, সোপিচ, ফলফলাদিসহ বিভিন্ন উপহার সামগ্রী নিয়ে থানায় হাজির হয় শতশত মানুষ। শিরোমণি এলাকার হতদরিদ্র কুলসুম বেগম নিজের খাওয়ার জন্য বোনের কাছ থেকে পাওয়া নারীকেল, সুপারি, কদবেল নিয়ে হাজির হয় থানায়। নিজের হাতে বিদায়ী অফিসারের কাছে তুলে দিয়ে ভালোবাসায় সিক্ত হলেন মানবিক পুলিশ কামাল হোসেন খান। পরে একে একে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ ফুলসহ বিভিন্ন উপহার সামগ্রী নিয়ে বিদায় জানাতে হাজির হয় থানায়। দুপুর সোয়া ১টায় খানজাহান আলী থানার সহকর্মিদের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়া হয় মোঃ কামাল হোসেন খানকে এবং নবাগত অফিসার্স ইনচার্জ মোঃ মম্তাজুল হককে ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করে নেওযা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সহকারী পুলিশ কমিশনার দৌলতপুর জোন) আব্দুল বাশার। থানার এসআই দৌলা দে’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সম্মানীত অতিথি ছিলেন সদ্য যোগদানকারা খানজাহান আলী থানার অফিসার্স ইনচার্জ মোঃ মম্তাজুল হক এবং বিদায়ী অতিথি খুলনা সদর থানায় পদায়নকৃত অফিসার্স ইনচার্জ মোঃ কামাল হোসেন খান শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ করেন খানজাহান আলী থানার ওসি তদন্ত পলাশ কুমার দত্ত, কেসিসি ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড আ’লীগের সাধারন সম্পাদক এস এম মনিরুজ্জামান মুকুল, সেকেন্ড অফিসার পীযুষ দাস, এস আই কামরুল হুদা, এ এস আই তুহিন মিয়া, কসষ্টেবল দিপক, খানজাহান আলী থানা সাংবাদিক ইউনিটের সভাপতি শেখ বদরউদ্দিন, সহ-সভাপতি শফিক সরদার, দৈনিক ফুলতলা প্রতিদিনের সম্পাদক সুমন সরদার, সাংবাদিক সাইফুল্লাহ তারেক, গাজী মাকুল উদ্দীন, মিহির রজ্ঞন বিশ^াস, খানজাহান আলী থানা প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোশারফ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ আসলাম হোসেন, তোফাজ্জেল হোসেন, এমকে ল্যাবের স্বত্তাধীকারী শিশির বর, ইকতিয়ার হোসেন মওলা, আসাদুজ্জামান। অন্যাণ্যের মধ্যে শিরোমণি তরুণ সংঘের সভাপতি শেখ তরিকুল ইসলাম, ২নং ওয়ার্ড আ’লীগ নেতা এফ এম জাহিদ হাসান জাকির, কাজী আজাদুর রহমান হিরক, মোঃ ফয়সাল হোসেন। বিদায়ী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বলেন, কর্মের মধ্যে দিয়ে পুলিশ জনগণের বন্ধু তার প্রমাণ ওসি কামাল হোসেন। তিনি বলেন রাষ্ট্রিয় পেশাদারিত্ব পালনে সর্বমহলে প্রশংসিত বিদায়ী পুলিশ কর্তকর্তা কামাল হোসেন খান তার মেধা, কৌশল, বুদ্ধিমত্তা আর সুনিপুণ বিচক্ষণাতায় কাজ করে সর্বস্তরের জনসাধারনের কাছে ভালোবাসার পাত্র হিসাবে নিজেকে উপস্থাপন করেছেন যা পুলিশ বাহিনীর জন্য গৌরবের। সহকারী পুলিশ কমিশনার অনুষ্ঠানে বিদায়ী এবং নবাগত অফিসার্স ইনর্চাজ উভয়কে অর্পিত রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালনে সর্বোচ্চটা দিয়ে জনগণের সেবা করার আহবান জানান। অনুষ্ঠানে খানজাহন আলী থানার সর্বস্থরের পুলিশ সদস্য, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিকস মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিবর্গসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ উপস্থিত ছিল।
অনুষ্ঠান শেষে পুলিশ সদস্যরা যখন উর্ধতন কর্মকর্তাদের নিয়ে এবং দুপুরের খাবারের জন্য ব্যস্ত ঠিক তখন সকলের চোখ ফাঁকি দিয়ে কামাল হোসেন খান যখন থানার গারদ খানায় থাকা যৌতুক মামলার আটককৃত পঞ্চাশর্ধ বয়েসের এক ব্যক্তিকে নিজের হাতে দুপুরের খাবার পৌছে দেন। মানবিক এই পুলিশ অফিসার কামাল হোসেন খানের চিরাচরিত অভ্যাসটি ধরা পড়ে উপস্থিত কয়েকজন সাংবাদিকের চোখে। বিকেলে নবাগত অফিসার্স ইনচার্জকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে সকলকে বিদায় জানানোর পর বিদায়ী অফিসার্স ইনচার্জকে ফুল এবং রং বেরংয়ের বেলুন দিয়ে সুসজ্জিত গাড়ীতে তাকে বর্তমান কর্মস্থল খুলনা সদর থানায় পৌছে দেওয়া হয়