কেডিএ’র মাস্টার প্লানে নগরায়ন এখন সময়ের ব্যাপার

আবাসন প্রকল্প-পরিবেশ শীর্ষক গণশুনানীতে বক্তারা
স্টাফ রিপোর্টার ঃ খুলনার আবাসন প্রকল্প এবং পরিবেশ শীর্ষক গণশুনানী বুধবার সকালে স্থানীয় একটি অভিজাত হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়। এই গণশুনানীর আয়োজন করে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবীদ সমিতি (বেলা)। গণশুনানীতে সঞ্চালক বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান বলেন, কেডিএ’র মাস্টার প্লান অনুযায়ী নগরায়ন এখন সময়ের ব্যাপার। বড় লোকদের জন্য আবাসন প্রকল্প করছে কেডিএ। এ কালচার থেকে বের হতে হবে। দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত লোকদের জন্য আবাসন প্রকল্প করতে হবে। এবং তা বন্টন বা বিক্রি প্রক্রিয়া খুবই স্বচ্ছতার সাথে করতে হবে। কেডিএ’র আইন পাশ কাটিয়ে উপজেলা পরিষদ কর্তৃক ভবন নির্মাণসহ বিভিন্ন আইন কখন শুভকর নয়। অসাধু চক্র কেডিএ-কে পাশ কাটিয়ে উপজেলা পরিষদের নিকট গিয়ে ভবন নির্মাণসহ নানা বিষয় অনুমোদন নিয়ে আসছে। যা উপজেলা পরিষদ দিতে পারে না। ময়ুর নদ সিএস খতিয়ান অনুযায়ী সিমানা নির্ধারণ করা উচিত। সে মতে, নদের পাশে ওয়াকওয়ে ও সবুজ বনায়ন করতে হবে। তবেই ময়ুর নদ দখলসহ দুষণ রোধ করা সম্ভব। তিনি আরো বলেন, নদীর সঙ্গে মানুষের আত্মার সম্পর্কে আছে। নদীর পানির স্রোত আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে। নদীকে আমরা মেরে ফেলতে পারি কিন্তু সৃষ্টি করতে পারি না। ময়ুর নদীকে বাঁচাতে না পারলে খুলনাবাসীও বাঁচাতে পারবে না। আমাদের আগামী প্রজন্মকে সুন্দরভাবে বাঁচানোর জন্য নদীকে রক্ষা করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। অতিথির বক্তব্য রাখেন কেডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী কাজী মোঃ সাবিরুল আলম। তিনি বলেন, বেসরকারি আবাসন ব্যবসায়ীরা অন্যের জমি আমমোক্তা নিয়ে তা ক্রেতাদের নিকট বিক্রি করে থাকে। গ্রাহক তা কেনার পর বিপদে পড়ে। এ ব্যাপারে তাদের সর্তক করা হচ্ছে। কেডিএ এ ব্যাপারে গ্রহক ও আবাসন মালিকদের সাথে একাধিকবার বৈঠক করেছে। না শুনার পর সম্প্রতি এসব আবাসন প্রকল্পের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করা হয়েছে। কেডিএ এসব আবাসন ব্যবসা সঠিকভাবে করার জন্য আরো কঠোর হচ্ছে। বর্তমান চেয়ারম্যান অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে নগরবাসীর সেবা দিয়ে চলেছে। ভবন নকশা খুবই অল্প সময়ের মধ্যে দিয়ে কেডিএ সুনাম অর্জন করেছে। এছাড়া কেডিএ নগরীর বড় বড় মোড়ে বিল বোর্ড দিয়ে খুলনাবাসীকে সর্তক করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ ধারা অব্যাহত থাকবে। গণশুনানীতে কী নোট পেপার উপস্থাপন করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউআরপি বিভাগের প্রফেসর আহসানুল হক। আরো অতিথি ছিলেন কেডিএ’র প্রকল্প কর্মকর্তা তানভীর আহমেদ, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারি কমিশনার (ভূমি) আরিফুল ইসলাম, পরিবেশ অধিদপ্তর বিভাগীয় উপ পরিচালক আরেফিন বাদল। বক্তারা বলেন, কৃষি জমি এভাবে অকৃষি কাজে ব্যবহার অব্যাহত থাকলে আগামী ২০৫০ থেকে ২০৭০ সালের মধ্যে দেশে কোন কৃষি জমি থাকবে না। দেশে ১২ ভাগ জলাশয় থাকা দরকার। কিন্তু বালু আর ভূমি সন্ত্রাসের কারণে তা এখন নেই। বিকেলে বেলার টিম শোলমারি, ভন্দ্র নদীতে সরেজমিন পরিদর্শনে যান। নদী ভরাট ও দখলের ভয়াবহ অবস্থা দেখে বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান ক্ষোভ প্রকাশ করেন। নদী বাঁচাতে আন্দোলন সংগ্রাম ও এলাকাবাসীকে সচেতন করার কর্মসূচী গ্রহণের কথা বলেন। বেলার বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমান মুকুলের সার্বিক পরিচালনায় শুনানীতে বক্তৃতা করেন পরিবেশ সুরক্ষা মঞ্চের আহবায়ক এড. কুদরত ই খুদা, সদস্য সচিব সুতপা বেদজ্ঞ, এড. বাবুল হাওলাদার, কুয়েটের শিক্ষক তুষার কান্তি রায়, সাংবাদিক এইচএম আলাউদ্দীন, খলিলুর রহমান সুমন, আবুল হাসান হিমালয়, আইআরভি’র মেরিনা যুথি, ক্লিনের হাসান মেহেদীসহ নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ।