নগরীতে সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশের বিশেষ অভিযান নিয়ে কেএমপি’র প্রেস ব্রিফিং

চোরাইকৃত ৩টি স্বর্ণের চেইন ও ২৪ হাজার ৩শ ৬২ টাকা উদ্ধারসহ ৩ আসামী গ্রেফতার
স্টাফ রিপোর্টার : নগরীর খাঁ বাড়ি মোড় থেকে সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে চোরাইকৃত ৩টি স্বর্ণের চেইন ও নগদ ২৪ হাজার ৩শ ৬২ টাকা উদ্ধারসহ ৩ আসামী গ্রেফতার হয়েছে। ২৭ ডিসেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টায় কেএমপির সোনাডাঙ্গা মডেল থানা প্রাঙ্গণে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এএন্ডও) সরদার রাকিবুল ইসলাম, বিপিএম-সেবা প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই বিষয়টি নিশ্চিত করেন। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মদিনা মসজিদ সর্দার পাড়া এলাকার মৃত. কবির শেখের ছেলে রনি শেখ (২২), পূর্ব রূপসা, বাগমারা এলাকার শাহাদাৎ শেখের ছেলে মোঃ রবিউল ইসলাম ওরফে রবি(২২) এবং রূপসা খোড়া বটতলা এলাকার নজরুল মোল্লার ছেলে মোঃ জুম্মান মোল্লা (২২)। মিডিয়া বিফ্রিংয়ে কেএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, “খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ সবসময় অপরাধ দমন, আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ এবং নগরবাসীর সেবায় সর্বদা তৎপর। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশে সুযোগ্য পুলিশ কমিশনার মোঃ মোজাম্মেল হক, বিপিএম (বার), পিপিএম এর দিক নির্দেশনায় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গ্রেফতার, মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার ও তাদের কাছ থেকে মাদকদ্রব্য উদ্ধার, জঙ্গি, নাশকতাকারিদের গ্রেফতার এবং আলামত উদ্ধারসহ বিভিন্ন মামলার আসামি গ্রেফতার, পরোয়ানাভুক্ত আসামি গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে। গত পহেলা আগস্ট থেকে ইতিমধ্যেই বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র, মাদকদ্রব্য, চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি এবং অনেক অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, নাশকতাকারী ও বিভিন্ন মামলার সাজা প্রাপ্ত আসামিদের গ্রেফতার করেছি। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৬ ডিসেম্বর রাত পৌনে ১১টায় সোনাডাঙ্গা মডেল থানার একটি চৌকস টিম কর্তৃক উক্ত থানাধীন খাঁ বাড়ি মোড়স্থ মরিয়ম এন্টারপ্রাইজ নামক বন্ধ দোকানের সামনে গ্রেফতারকৃত আসামী রনি শেখ (২২)কে গ্রেফতারপূর্বক ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তার হেফাজত থেকে ১টি বিচা স্বর্ণের চেইন, (যার ওজন ১ ভরি ৬ আনা) যার মূল্য অনুমান-১ লক্ষ) টাকা, চুরি যাওয়া ৪,৩৬২/-(৪ হাজার ৩শ বাষট্টি টাকা উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে আসামী রনি শেখের (২২) দেওয়া তথ্য মতে তার সহযোগী আসামী মোঃ রবিউল ইসলাম ওরফে রবি(২২) কে ২৬ডিসেম্বর রাত ১১টা ১৫ মিনিটে সোনাডাঙ্গা মডেল থানাধীন রাধুনী হোটেলের সামনে থেকে গ্রেফতারপূর্বক ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তার হেফাজত হতে ১টি স্বর্ণের চেইন(যার ওজন ৩ আনা ২ রতি ৯ পয়েন্ট) মূল্য অনুমান ৩০ হাজার টাকা, চুরি যাওয়া ১০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। অতঃপর গ্রেফতারকৃত আসামী রনি শেখ(২২) ও মোঃ রবিউল ইসলাম ওরফে রনির দেওয়া তথ্য মতে তার সহযোগী আসামী মোঃ জুম্মান মোল্লা কে গত ২৬ডিসেম্বর রাত ১১টা ৫৫মিনিটে সোনাডাঙ্গা থানাধীন ময়লাপোতা মোড়স্থ রহিম ভল্কানাইজিং নামক বন্ধ দোকানের সামনে থেকে গ্রেফতারপূর্বক ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তার হেফাজত হইতে ১টি স্বর্ণের চেইন, (যার ওজন ৫ আনা ১ রতি ৮ পয়েন্ট) মূল্য অনুমান ৪০ হাজার টাকা এবং চুরি যাওয়া ১০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীরা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে যে, পলাতক আসামী মোঃ তানভীর সহ আরো ২-৩ জন ঘটনার সাথে জড়িত রয়েছে। পলাতক আসামীদের গ্রেফতারসহ অবশিষ্ট চোরাইকৃত মালামাল উদ্ধারের অভিযান অব্যাহত আছে। আসামীদের পিসিপিআর যাচাই করে দেখা যায়, ১নং আসামী রনি শেখ এর বিরুদ্ধে কেএমপি’র খুলনা সদর থানার, এফআইআর নং-৩৩, তারিখ ২৫ মে, ২০২৩, ধারা- ৪৫৭/৩৮০/৪১১ পেনাল কোড ১৮৬০; ২নং আসামী মোঃ রবিউল ইসলাম ওরফে রবির বিরুদ্ধে কেএমপি’র খুলনা সদর থানার এফআইআর নং-৩৩, তারিখ-২৫ মে, ২০২৩, ধারা- ৪৫৭/৩৮০/৪১১ পেনাল কোড এবং ৩নং আসামী মোঃ জুম্মান মোল্লার বিরুদ্ধে বাগেরহাট এর কচুয়া থানার এফআইআর নং-৭/৭৬, তারিখ-২৪ নভেম্বর, ২০২০, ধারা-৪৫৭/৪৬১/৩৭৯/৩৮০/৪১১ পেনাল কোড-১৮৬০; কেএমপি এর খালিশপুর থানার এফআইআর নং-৫০/৩৪৫, তারিখ- ২৫ জুলাই, ২০১৮, ধারা-৪৫৭/৩৮০ পেনাল কোড-১৮৬০; খুলনার রূপসা থানার এফআইআর নং-৬, তারিখ-০৪ মার্চ, ২০২৩, ধারা-৪৫৪/৩৮০ পেনাল কোড ১৮৬০; খুলনা এর রূপসা থানার এফআইআর নং-১৮, তারিখ-২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ধারা-৩৬(১) সারণির ১৯(ক) মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮; কেএমপির খুলনা সদর থানার এফআইআর নং-৩/৩, তারিখ-২ জানুয়ারি, ২০২০, ধারা-৪৫৭/৩৮০ পেনাল কোড-১৮৬০ এবং খুলনা এর রূপসা থানার এফআইআর নং-৬, তারিখ-০৪ মার্চ, ২০২৩, ধারা- ৪৫৪/৩৮০ পেনাল কোড ১৮৬০ মূলে বিভিন্ন অপরাধের মামলা পাওয়া যায়।
উল্লেখ, গত ২৫ডিসেম্বর বিকাল অনুমান ৩টা৪৫ মিনিট থেকে বিকাল অনুমান সাড়ে ৪টার মধ্যে যেকোন সময় জনৈক মোঃ সিরাজুল ইসলাম(৩৫) এর বাসা থেকে নগদ ৫০ হাজার টাকা এবং ৩টি স্বর্ণের চেইন, যার ওজন অনুমান ১ ভরি ৮ আনা, মূল্য অনুমান ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা এবং ১টি স্বর্ণের আংটি, যার ওজন ৬ আনা, মূল্য অনুমান ২৫ হাজার টাকা। উক্ত স্বর্ণ অলংকার ও নগদ সহ সর্বমোট ২ লক্ষ ২৫ হাজার টাকার মালামাল অজ্ঞাতনামা চোর বা চোরেরা চুরি করিয়া নিয়ে যায়। এই সংক্রান্তে মোঃ সিরাজুল ইসলাম(৩৫) বাদী হইয়া এজাহার দায়ের করলে সোনাডাঙ্গা মডেল থানার মামলা নং-১৯, তাং-২৬/১২/২০২৩ খ্রিঃ, ধারা-৪৫৪/৩৮০ পেনাল কোড রুজু করা হয়েছে।
এসময় কেএমপি’র ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম; অতিঃ ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) এ.জেড.এম তৈমুর রহমান; সহকারী পুলিশ কমিশনার (সোনাডাঙ্গা জোন) আবু নাসের আল-আমিন এবং সোনাডাঙ্গা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান-সহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ, পুলিশ অফিসারবৃন্দ ও ফোর্স উপস্থিত ছিলেন।