স্থানীয় সংবাদ

যশোর-৪ আসনে সরলেন রনজিৎ : দাঁড়ালেন বাবুল

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

মেহেদী মাসুদ খান ঃ যশোর-৪ (বাঘারপাড়া-অভয়নগর ও বসুন্দিয়া) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এনামুল হক বাবুলকে সমর্থন জানিয়ে ভোটের মাঠ থেকে সরে দাঁড়ালেন স্বতন্ত্র প্রার্থী বাঘারপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রনজিত কুমার রায়। মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) দুপুর ১ টার দিকে ফোনে এ কথা জানান, বর্ষিয়ান রাজনীতিক তিনবারের সংসদ সদস্য রনজিত কুমার রায়। একইসাথে তার সকল নেতাকর্মীকে নৌকার পক্ষে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন। ফোনে তিনি বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আমার প্রতীক ছিল ঈগল। আমি বরাবরই বলে এসেছি নৌকার বিপক্ষে কখনও নির্বাচন করবো না। সে কারণে প্রতীক বরাদ্দের পরও আমি কোন প্রকার প্রচারণা চালাইনি। বাঘারপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নৌ পরিবহন মন্ত্রাণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য রনজিত কুমার রায় ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ওই নির্বাচনে রনজিত কুমার রায় পেয়েছিলেন ১ লাখ ২ হাজার ৯৫৮ ভোট। এ নির্বাচনে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ুব। তিনি ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছিলেন ৯৭ হাজার ৫২০ ভোট। এরপর ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন রনজিত কুমার রায়। এ নির্বাচনে তিনি পেয়েছিলেন ৭৬ হাজার ৯৪২ ভোট। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন নিজ দলের প্রার্থী অধ্যক্ষ শেখ আব্দুল ওহাব। ওহাব কলস প্রতীক নিয়ে পেয়েছিলেন ৩৬ হাজার ২৮০ ভোট। সর্বশেষ, গত ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোর-৪ (বাঘারপাড়া-অভয়নগর) আসনে বিপুল ভোটে আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী রনজিৎ কুমার রায় জয়লাভ করেন। তিনি ভোট পেয়েছিলেন ২ লাখ ৭৬ হাজার ২৮১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির টিএস আইয়ূব পেয়েছিলেন ২৫ হাজার ৯শ’ ১৯ ভোট। প্রার্থিতা বহাল থাকছে আ’লীগ প্রার্থী এনামুল হক বাবুলের ঃ অপরদিকে যশোর-৪ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এনামুল হক বাবুলের প্রার্থিতার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে করা আবেদন খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। ফলে,এনামুল হক বাবুলের প্রার্থিতা বহাল রয়েছে। মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। আদালতে তার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহ্ মঞ্জুরুল হক। এনামুল হক বাবুলের বিরুদ্ধে ঋণখেলাপির অভিযোগ এনে আপিল করেছিলেন একই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সুকৃতি কুমার মন্ডল (নোঙ্গর প্রতীক)। এ ছাড়া এনামুল হক বাবুলের মনোনয়নপত্রের বৈধতার বিরুদ্ধে এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঈগল প্রতীক) রনজিত কুমার রায় আপিল করেছিলেন। শুনানি শেষে ১৩ ডিসেম্বর প্রার্থিতা বাতিল করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পরে এনামুল হক বাবুল হাইকোর্টে রিট করেন। গত ১৮ ডিসেম্বর হাইকোর্ট তার রিট সরাসরি খারিজ করে আদেশ দেন। এরপর তিনি আপিল বিভাগে আবেদন করেন। ১৯ ডিসেম্বর চেম্বার আদালত তার প্রার্থিতা ফেরত দেন। পরে নির্বাচন কমিশন ওই আদেশ প্রত্যাহারের আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার শুনানি দিন ধার্য করা হয়। শুনানি শেষে ওই পদে বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। যে কারণে আর কোন সমস্যা থাকল না নৌকা মাঝি এনামুলক বাবুলের। নৌকার প্রার্থী এনামুল হক বাবুল বলেন, ‘আদালতের এই রায়ের প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল। এই রায়ের ফলে নির্বাচন করতে আর কোনো আইনি জটিলতা না থাকায় আমার নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচনের প্রাণ ফিরে পেয়েছে। এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অন্যান্য প্রার্থীরা হচ্ছেন, জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের অ্যাডভোকেট জহুরুল হক, তৃণমূল বিএনপির লে. কর্নেল (অব:) এম শাব্বির আহমেদ সোনালী আঁশ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সুকৃতি কুমার মন্ডল নোঙ্গর ও মিনার প্রতীক নিয়ে ইসলামী ঐক্যজোটের ইউনুস আলী।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button