যোগিপোলে নৌকার নির্বাচনী অফিসের নৈশ প্রহরী হাসানের গায়ে আগুন
আহত হাসানের পরিবার ও হাসপাতালের শয্যা পাশে এস এম কামাল হোসেন
এর আগে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল অফিসে
খানজাহান আলী থানা প্রতিনিধি ঃ খুলনা-৩ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের এস এম কামাল হোসেনের যোগিপোল ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের নির্বাচনী অফিসের নৈশ প্রহরী হাসান ফরাজীর(৪৫)গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়েছে দুষ্কৃতিকারীরা। ৪ জানুয়ারী দিবাগত রাত ২টায় যোগিপোল মধ্যপাড়ার বাসা থেকে বের হলে কিছু দূর যাওয়ার পর ৪/৫ জন ব্যক্তি তাকে পেছন থেকে যাপটে ধরে আগনে দেয়। আগুনে হাসান ফরাজীর শরীরের মাথায়, গলায় এবং হাতের কিছু অংশ পুড়ে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রাতেই খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। খবর পেয়ে হাসপাতালে আহত হাসান ফরাজীকে দেখতে যায় এস এম কামাল হোসেনেসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। পরে তিনি আহত হাসানের পরিবারের সাথে দেখা করে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এর অগে গত ২৪ ডিসেম্বর গভীর রাতে অজ্ঞাত দুষ্কৃতিকারীরা যোগিপোল ৭নং ওয়ার্ডের নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী অফিসে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। ঐ ঘটনায় অফিসের চেয়ার, ত্রিপল, সাইড কাপড় এবং অফিসের পাশে রাখা একটি ভ্রাম্যমান দোকান পুড়ে যায়।
স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে, খুলনা-৩ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের এস এম কামাল হোসেনের যোগিপোল ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের নির্বাচনী অফিসে সম্প্রতি অগ্নিসংযোগের পর অফিসটি পাহারা বসানো হয়। দুই শিফটে আইয়ুব আলী ও হাসান ফরাজী ডিউটি করতো। ঘটনার দিন ৪ জানুয়ারী দিবাগত রাত ২টার দিকে হাসান ফরাজী অফিস পাহারা দেওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়। কিছু দুর যাওয়ার পর রফিক মোড়লের বাড়ীর পিছনে আসলে পেছন থেকে তার গায়ে আগুন দেয়। তার চিৎকারে পার্শবতিরা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায। খবর পেয়ে পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। হাসান ফরাজীর ভাইপো আল আমিন ফরাজী জানায়, রাত ২টার দিকে নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী অফিস পাহারা দেওয়ার জন্য তিনি বাসা থেকে বের হয়। কিছু দুর যাওয়ার পর ৪/৫ জন ব্যক্তি তাকে যাপটে ধরে তার গাযে ধায্য পদার্থ দিয়ে আগুন দেয়। তার চিৎকারে পার্শবর্তিরা এগিয়ে এলে দুষ্কৃতিকারীরা পালিয়ে যায়। আগুনে তার মাথায়, গলায় এবং হাতের কিছু অংশ পুড়ে যায়। স্থানীয়দের সহায়তায় রাতেই তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি কিছুটা সুস্থ আছে। এ বিষয়ে ওয়ার্ড নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক সুরুজ্জামান হানিফ বলেন, নির্বাচনী অফিস পাহারা দেওয়ার জন্য হাসান ফরাজী রাতে অফিসে যাচ্ছিল বাসা থেকে কিছু দূর যাওয়ার পর কে বা কারা তার গায়ে কেরোসিন দিয়ে আগুন দেয়। পার্শবর্তিরা এগিয়ে আসায় তার জীবন রক্ষা পেলেও হাসান ফরাজীর শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে গেছে। এদিকে খবর পেয়ে সকালে হাসপাতালে হাসান ফরাজীকে দেখতে যান খুলনা-৩ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের এস এম কামাল হোসেন। এ সময় তিনি আহত হাসান ফরাজীর চিকিৎসার খোজখবর নেন এবং পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেন। পরে তিনি যোগিপোলস্থ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আহত হাসান ফরাজীর বাড়ীতে গিয়ে পরিবারের সাথে দেখ করেন। এ সময় তার সাথে মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও ৩৩নং ওয়ার্ড নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক বেগ লিয়াকত আলী, যুগ্ন আহবায়ক থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আনিছুর রহমান, যুগ্ন আহবায়ক , যোগিপোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাজ্জাদুর রহমান লিংকন, থানা আ’লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্জ মোড়ল আনিসুর রহমান, ওয়ার্ড আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মোড়ল হাবিবুর রহমান, থানা আ’লীগ নেতা সুরুজ্জামান হানিফ, ৭নং ওয়ার্ড মেম্বর শেখ আমজাদ হোসেন, ৮নং ওয়ার্ড মেম্বর শাহ হাফিজুর রহমানসহ থানা, ওয়ার্ড ও সেন্টার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিল। এ বিষয়ে খানজাহান আলী থানার অফিসার্স ইনচার্জ মো. মমতাজুল হক বলেন, হাসান ফরাজীর গায়ে আগুন দেওয়ার ঘটনার বিষয়টি আমরা গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। এই ঘটনায় আহত হাসান ফরাজীর সাথে কথা হয়েছে তিনি কিছু তথ্য দিয়েছে এছাড়া প্রাপ্ত বিভিন্ন তথ্য উপাথ্য যাচাই বাছাই করে গুরুত্বের সাথে বিষয়টি দেখা হচ্ছে। তিনি জানায় এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত(শুক্রবার বিকাল-৪টা) কেহ থানায় কোন অভিযোগ করেনি।
উল্লেখ্য যোগিপোল ৭নং ওয়ার্ডের এই নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী অফিসে গত ২৪ ডিসেম্বর রাত ২টা ৩০ মিনিটের দিকে কে বা কারা কেরোসিন ঢেলে অগ্নিসংযোগ করে। আগুনে অফিসের মধ্যে থাকা প্লাস্টিকের ১০টি চেয়ার, ১টি ত্রিপল, ১টি সাইড কাপড়, অফিসের পাশে থাকা একটি ভ্রাম্যমান দোকান পুড়ে যায়। ঐ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ২০/২৫জনকে আসামী করে সেন্টার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক সুরুজ্জামান হানিফ মামলা করেন।