স্বচ্ছতা জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণে কেসিসি নতুন নিয়ম : বাধ্যতামূলক করেছে ভবনের ছবি

গত বছর সাড়ে ৪২ কোটি টাকা হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় ; এবার বেড়েছে আদায়ের হার ; বৃদ্ধির হার ৭৯.৬৬%
খলিলুর রহমান সুমন ঃ স্বচ্ছতা জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) হোল্ডিং ট্যাক্স (গৃহকর) নির্ধারনের ক্ষেত্রে ওই ভবনের ছবি বাধ্যতামূলক করেছে। আগে এ নিয়ম থাকলেও তার নিশ্চিত করা হতো না। তবে মঙ্গলবার থেকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করার নির্দেশনা দিয়েছেন কর আদায় শাখার প্রধান ও রাজস্ব অফিসার মোঃ অহিদুজ্জামান খান। এদিকে খুলনা নগরীতে ৭৬৬২৮টি হোল্ডিং রয়েছে। এর বিপরিতে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে কেসিসি প্রায় সাড়ে ৪২ কোটি টাকা হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় করে। আনাদায়ী রয়েছে প্রায় কোটি টাকার মত। চলতি অর্থ বছরে হোল্ডিং ট্যাক্স আদায়ের টার্গেট ধরা হয়েছে ৪১ কোটি টাকা। সেই টার্গেটের অংশ হিসেবে কর আদায় শাখা সেকেন্ড কোয়াটার পর্যন্ত (তিন মাসে এক কোয়াটার) আদায় করেছে ৩২ কোটি ৬৬ লাখ ২৫ হাজার ৫৫০ টাকা। গত অর্থ বছরে একই কোয়াটারে আদায় করা হয় ৩১ কোটি ৩৬ লাখ ২৬ হাজার ৫৭৮ টাকা। গত বছরের তুলনায় এবার আদায় বেশী হয়েছে ১ কোটি ২৯ লাখ ৯৮ হাজার ৯৭২ টাকা। জুলাই’২৩ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এ আদায় করা হয়। যা আদায়ের হার ৭৯.৬৬% বেশি। কর আদায় শাখার প্রধান তপন কুমার নন্দী বলেন, অনাদায়ী একশত কোটি টাকার হোল্ডিং ট্যাক্স বড় অংশ আদায় করা অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে নৌ বাহিনীর, বন্ধ পাটকল, এজাক্স জুট মিল, দৌলতপুরের কয়েকটি পাটের গোডাউনসহ বড় বড় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান থেকে বকেয়া হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের কেসিসির পাওনা ৫০ কোটি টাকার মত হবে। বাকী বকেয়া টাকা ধারাবাহিকভাবে আদায় করা হচ্ছে। আগের মত বাড়ির মালামালক্রোকসহ নানা ধরনের অনাকাংখিত ঘটনা এখন আর ঘটছে না। ভবন মালিকরা অনেক সচেতন, তারা নির্ধারিত সময়ে হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করছেন বলে তপন নন্দী জানান। বকেয়া হোল্ডিং ট্যাক্স আদায়ের গতি বিগত দিনের চেয়ে অনেক বেড়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
কেসিসির রাজস্ব অফিসার মোঃ অহিদুজ্জামান খান বলেন, হোল্ডিং ট্যাক্স ধরার জন্য এখন নতুন ভবন ও বর্ধিত ভবনের ছবি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। হোল্ডিং ট্যাক্সের বিল নথির সাথে ওই ছবি যুক্ত থাকবে। এতে করে নগরীর সকল ভবনের প্রকৃত ধারণা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে থাকবে। এতে করে হোল্ডিং ট্যাক্স ধার্য করাকালিন যে অনিয়ম হতো তা অনেকাংশে কমবে। বাড়বে স্বচ্ছতা জবাবদিহিতা ও রাজস্ব আয়। একই সাথে এখন ভবন মালিকরা ইচ্ছা করলেই হোল্ডিং ট্যাক্স অনলাইনে ঘরে বসে জমা দিতে পারেন। এতে করে বাড়ির মালিকদের সময় বাঁচবে আর ঝামেলা মুক্ত থাকবেন। তিনি বলেন, নগরীতে নতুন করে ১১৫৮টি ভবন হয়েছে। যার বিপরিতে ট্যাক্স ধরা হয়েছে ২ কোটি ৬ লাখ ২৬ হাজার ৫৯ টাকা। এছাড়া ১৪০৩টি ভবনের ট্যাক্স হাল নাগাদ করা হয়েছে। এসব ভবনের বিপরিতে ৪ কোটি ৪৬ লাখ ৮৯ হাজার ৫৮৮ টাকা হোল্ডিং ট্যাক্স ধার্য করা হয়েছে। চলতি বছরে নতুন করে মোট ৬ কোটি ৫৩ লাখ ১৬ হাজার ৯৫০ টাকা হোল্ডিং ট্যাক্স ধরা হয়েছে। এ ট্যাক্স আদায়ে কেসিসি নতুন নতুন কৌশল গ্রহণসহ তৎপর রয়েছে বলে তিনি জানান। হোল্ডিং ট্যাক্স আদায়ে যার কৌশল সফলতার পিছনে কাজ করছে তিনি হলেন কেসিসির প্যানেল মেয়র-৩ ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর এড. মেমরী সুফিয়া রহমান শুনু। তিনি প্রবাহকে বলেন, ভবন মালিকদের সহনীয় পর্যায়ে হোল্ডিং ট্যাক্স ধরা হয়েছে। এতে করে ভবন মালিকরা সন্তুষ্টচিত্তে তারা নির্ধারিত সময়ে হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করছেন। এছাড়া এককালিন হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধের ক্ষেত্রে ভবন মালিকদের ছাড় দেয়াসহ নানা ধরনের সুবিধা দেয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সচেতন হোল্ডিং মালিকরা কেসিসি এ সুবিধা গ্রহণ করছেন বলে তিনি জানান।