সোনালী জুট মিলস্ ওয়াকার্স ইউনিয়নের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনের তফশীল ঘোষণা : ১৮ ফেব্রয়ারী নির্বাচন

৪৫ দিনের এডহক কমিটি তিন বছর, অবশেষে আদালতের নির্দেশে
খানজাহান আলী থানা প্রতিনিধি ঃ নগরীর মীরেরডাঙ্গা শিল্পাঞ্চলের নামমাত্র চালু সোনালী জুট মিলস্ ওয়াকার্স ইউনিয়নের মেয়াদ শেষে করোনাকালিন নির্বাচন বন্ধ রেখে গঠিত পয়তাল্লিশ দিনের এডহক কমিটি চলছে তিন বছরের অধিক সময় ধরে। মিলটির শ্রমিক নেতাসহ একাধিক শ্রমিক ওয়াকার্স ইউনিয়নের নির্বাচনের দাবীতে চার দফা আবেদন করেও নির্বাচনের ব্যবস্থা না করায় শেষমেশ বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। মিলের তৈয়ারী বিভাগের শ্রমিক মো. হারেছ আহম্মেদ বাদী হয়ে খুলনার শ্রম অধিদপ্তরের শ্রম পরিচালক মো. মিজানুর রহমানকে বিবাদী করে খুলনার বিজ্ঞ বিভাগীয় শ্রম আদালতে অভিযোগ দায়ের করে( যার নং শ্রম-৩৭ তাং-৬/১১/২২)। অবশেষে শ্রম আদালতে মামলাটির রায় দিয়ে আগামী ত্রিশ দিনের মধ্যে নির্বাচনের নির্দেশ প্রদান করেছে। নির্দেশনা অনুযায়ী মিলটির কাংখিত ওয়াকার্স ইউনিয়নের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনের ঘোষিত তফশীল অনুযায়ী আগামী ১৮ ফেব্রয়ারী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাগেছে, সোনালী জুট মিলস্ ওয়াকার্স ইউনিয়ন কর্তৃক শ্রমিকদের পরিচালনার জন্য গঠনতন্ত্রের ১৮ধারা অনুযায়ী দুই বছর অন্তর সাধারণ নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে কার্যনির্বাহী কমিটি গঠনের বিধান রয়েছে। গঠনতন্ত্রের ২১ধারা অনুযায়ী গত ২৪/১১/২০২০ তারিখে কার্যনির্বাহী কমিটি বিলুপ্ত ষোধনা করে ৫সদস্যের এডহক কমিটি গঠন করা হয়। গঠনতন্ত্রের ২১ধারা অনুযায়ী এডহক কমিটির মেয়াদ কোন ভাবেই ৪৫দিনের অধিক হবে না বিধান থাকলেও ২০২০ সালের ২৪ নভেম্বর গঠিত ৪৫দিনের এডহক কমিটির মেয়াদ বৃদ্ধি করে অদ্যবদি তিন বছরের অধিক সময় কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এই অবস্থায় মিলের নির্বাচনের দবীতে শ্রম পরিচালক বরাবর ৪ দফায় পত্রপ্রেরণ করেন মিলের শ্রমিক ও নেতৃবৃন্দ। তাদের আবেদনের কোন সাড়া না পেয়ে শেষ পর্যন্ত বিষয়টি খুলনার বিজ্ঞ শ্রম আদালতে তোলেন একজন মিল শ্রমিক। মিলের নিয়ম শৃংখলা সঠিকভাবে পরিচালিত না হওয়ায় শ্রমিকদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করতে থাকায় বিষয়টি আদালতের আমলে নিয়ে আসেন মিলের হারেজ আহম্মেদ নামের এক শ্রমিক। তিনি শ্রম পরিচালক মো. মিজানুর রহমানকে বিবাদী করে খুলনার বিজ্ঞ বিভাগীয় শ্রম আদালতে অভিযোগ দায়ের করে( যার নং শ্রম-৩৭ তাং-৬/১১/২২)।
গত ১৮ ডিসেম্বর-২৩ মামলার রায় প্রদান করেন বিজ্ঞ শ্রম আদালত। রায়ের আদের্শে বলা হয় সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধি বিধান অনুসরণ পূর্বক আগামী ৩০ দিনের মধ্যে মিলটির ওযাকার্স ইউনিয়নের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠনের জন্য। একই সাথে নির্বাচন সম্পন্ন করে বিজ্ঞ শ্রম আদালত খুলনায় প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বিভাগীয় শ্রম পরিচালক খুলনাকে নির্দেশ প্রদান করেন। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ৩১ ডিসেম্বর-২৩, বিভাগীয় শ্রম দপ্তর, খুলনায় মালিকপক্ষ, শ্রমিকপক্ষ এবং মামলার বাদীর উপস্থিতিতে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিভাগীয় শ্রম দপ্তর খুলনা গত ৪ জানুয়ারী-২৪‘ সোনালী জুট মিলের ওয়াকার্স ইউনিয়নের দ্বি-বার্ষিক নির্বচানের জন্য মো. মিজানুর রহমানকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান করে ৩ সদস্যের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করে মামলার রায় বাস্তবায়নে আগামী ১৮/০২/২০২৪ তারিখ নির্বাচনের দিন নির্ধারণ করে তফশীল ঘোষনা করেন।
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যানের গত ১০ জানুয়ারীর স্বক্ষরিত ঘোষিত তফশীল অনুযায়ী আগামী ১৬ জানুয়ারী খসড়া ভোটার তালিকা মিলের নোটিশ বোর্ডে টানিয়ে দিয়েছে। আগামী ২০-২২ জানুয়ারী বিকাল ৪টা পর্যন্ত খসড়া ভোটার তালিকার উপর আপত্তি গ্রহণ করা হবে, ২৩ জানুয়ারী আপত্তি সমুহ নিস্পত্তি করে সিদ্ধান্ত জানানো হবে, ২৭ জানুয়ারী সকাল ১০টায় মিলের নোটিশ বোর্ডে চুড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে, ০১/০২/২৪ সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যণÍ মনোনয়নপত্র বিক্রয় করা হবে, ০৩/০২/২৪ সকাল ১০ টা খেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র দাখিল করা যাবে, ০৫/০২/২৪ মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে, ০৬/০২/২৪ চুড়ান্ত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে, ০৭/০২/২৪ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময়, ০৮/০২/২৪ প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে এবং ১৮ ফেব্রয়ারী সকাল ৮ টা থেকে বিরতিহীন ভাবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সোনালী জুট মিলস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।